মৌলভীবাজারে গ্রেফতার আতংকে পুরুষ শুন্য তিনটি গ্রাম
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায়পংম্মদপুর, লামুয়া, ও পূর্ব খলিলপুর গ্রামে গ্রেফতার আতংকে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে তিনটি গ্রাম। লামুয়া গ্রামের নিহত শফিকুর রহমান (২০) এর মা বানেছা বেগম (৬০) ছেলের রুহের মাগফেরাতের জন্য শিরনি নিয়ে বসে আছেন নেওয়ার কোনো পুরুষ লোক নেই। বানেছা বেগমের ৪ছেলে আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে।উল্লেখ্য গত ১৪ জুলাই পতিত জায়গা নিয়ে তোতা মিয়া গোষ্ঠী ও ফকির গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যেকথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মনর মিয়া (ফকির গোষ্ঠীর) লোকজনদেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে লামুয়া গ্রামের মৃত মুরাদ মিয়ার ছেলে শফিকুর রহমান (২০) ও পংম্মদপুর গ্রামের ওয়ারিছ মিয়ার ছেলে আব্দুল মালিক (৫০) নিহতহন । এ সময় সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়। ১৩জুলাই বিকেলে, তোতা মিয়া ও ফকির গোষ্ঠীর মধ্যে পূর্ব খলিলপুরের পতিত জমি নিয়ে ঝগড়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন,ঐ দিন রাতেই ফকির গোষ্ঠীর মনর মিয়ার নেতৃত্বে তোতা মিয়া গোষ্ঠীর লোকদেরকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র একত্রে জড়ো করে ও আক্রমনের জন্য লোকজন প্রস্তুত রাখে। পর দিন বিকেল বেলা অর্তকৃত ভাবে তোতা মিয়ার গোষ্ঠীর উপর হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের সংর্ঘষে দুজন নিহত হয়। ফকির গোষ্ঠীর লোকেরা বাড়ি ঘর ভাংচুর ও গরু বাছুর মালপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। পূর্ব খলিলপুর গ্রামের ফুলখাছ মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, মনর মিয়ার লোকেরা তাদের, লেবাস মিয়া, আনই মিয়া, বকির মিয়া, সানফর মিয়া, মুকিত মিয়া, মনফর মিয়া, আব্দুল হাকিম, আনছার মিয়াদের ৯টি বাড়ি ভাংচুর করে গরু বাছুর মালপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। এমন কি মহিলাদের উপর বেপড়–য়া ভাবে অত্যাচার চালায়। মৃত মখদ্দর আলীর স্ত্রী খছিরা বিবি ১১০ বছর বয়সি বৃদ্ধ মহিলা বলেন, বাবারে আমি তিনটা যুদ্ধ দেখেছি এ রকম অত্যাচার যুদ্ধেও সৈনিকরাও করেনি। আমি অসুস্থ্য বৃদ্ধ মানুষটিকেও মনর মিয়ার লোকেরা গলাটিপে ধরে পরে লাতি মেরে ফেলে দেয়। আমার কাকুতি মিনতি কেউ শুনেনি। ঘটনার চার দিন হয়ে গেলেও আমি এক ফোঁটা চা খাইনি বাবা। আমার খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে আমাকে একটু ঔষদের ব্যবস্থা করে দাও। এই গরমের মাঝে আমি আর পারছিনা বাবা। ছেলে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা বানেছা বেগম। এক ভাইকে হারিয়ে আহত অবস্থায় ৪ভাই জেলে থাকায় মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে বোন রেনু বেগম। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট বেশির ভাগই হয়েছে তোতা মিয়ার গোষ্ঠীর। তিনটি গ্রামের মধ্যে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর পরেও আতংকের মধ্যে রয়েছে তোতা মিয়ার গোষ্ঠীর মহিলা,বৃদ্ধ ও শিশুরা।