ধুনটে মোবাইল জুয়ায় আকৃষ্ট কোমলবতি শিক্ষার্থীরা
কারিমুল হাসান লিখন, ধুনট
বগুড়ার ধুনটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলবতি শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে এখন এ্যান্ডয়েড বা স্মাট ফোন। এসকল ফোনে বিভিন্ন সফটওয়ার এ্যাপস এর সাহায্যে গেমস খেলাসহ নানা ধরনের শিক্ষামুলক কিছু কাজ করা যায়।
সম্প্রতি লুডু নামের আরো একটি এ্যাপস খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি পরিচিতি লাভ করেছে। এ লুডু কাগজের তৈরী লুডুর মত সহজেই খেলা যায় বলে শিক্ষার্থীরা লুডু এ্যাপসটি ইনষ্টল করে খেলতে পারে। সহজলভ্য আর সহপাঠি নিয়ে খেলা যায় বলে বাজিতে আকৃষ্ট হচ্ছে অনেকে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরজমিনে দেখা যায় ক্লাস ফাকি দিয়েও প্রতিষ্ঠানের ফাকা ঘরে বসে টাকায় বাজি ধরে এ লুডু খেলছে শিক্ষার্থীরা। এসকল শিক্ষার্থীদের পেছনে শিক্ষকদের কতটুকু নজর আছে জানা নেই। প্রতিষ্ঠানের পাঠদান সময় পার হবার পর বিকেল বেলায় মাঠে বসেও টাকায় বাজি ধরে এ লুডু খেলতে দেখা গেছে অনেককেই। প্রাথমিক শিক্ষার্থী ছাড়াও যারা এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া শুরু করেনি তারাও যুক্ত হচ্ছে এ খেলায়।
বিশেষ বাড়ির পাশে যাদের স্কুল মাঠ রয়েছে তাদের কে রাত ১০টা পর্যন্তও এ খেলা খেলতে দেখা গেছে। এ গেমস খেলার পাশাপাশি কমলবতি শিক্ষার্থীরা নেশার দিকেও চলে যাচ্ছে অবচেতন মনে। এ খেলায় শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক যুবক ও যুবতীরাও আকৃষ্ট হয়ে টাকার বিনিময়ে বাজি ধরে খেলছে রাতদিন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিভাবক সমাবেশে এ সকল বিষয় উপস্থাপন করে সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরী।
শিক্ষা এগেও ছিলো শিক্ষা এখনও আছে। পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের। আগের দিনে কারো সাথে ঝগড়া হলে মায়েরা নিজের ছেলে/মেয়েকেই মারতো। আর এখন কিছু মায়েরা অন্যের ছেলেকে আঘাত করার উৎসাহ দেয়। আগের দিনে পড়া না পেলে শিক্ষক বেত্রাঘাত করতো। আর এখন বেত যখন নির্দেশনা কাঠি হয়েছে তখন থেকে কিছু শিক্ষার্থী বিপথে যাওয়া শুরু করেছে।
আগে যখন মেধা তালিকায় শিক্ষক নিয়োগ হতো তখন ঠিকই শিক্ষার্থীদের শিক্ষকরা নিয়ন্ত্রন করতো। যখন থেকে টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়েছে, তখন থেকেই কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শাসনে রাখার চেয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা ইনকামে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। এসকল নানা জটিলতার মধ্যে যদি শিক্ষার্থীরা মোবালে লুডু খেলার নামে টাকার বিনিময়ে বাজি ধরে জুয়া খেলতে থাকে তাহলে শিক্ষার বীজটা অঙ্কুরেই নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এখনই যদি অভিভাবক ও শিক্ষকগন শিক্ষার্থীদের সচেতন না করতে পারে তাহলে শিক্ষা জীবনে ধ্বস নামতে পারে। প্রতিটি এলাকার সচেতন মানুষের উচিত অসময়ে শিক্ষার্থীদের কথাও দেখলে শাসন করা। কিন্তু সমাজ তো এ শাসন গ্রহন করতে নারাজ। কেননা আমার ছেলে এটা করবে তাতে তোমার কি? এভাবেই বলতে পারে অনেক অভিভাবক। নিজে বদলাই, নিজে সচেতন হই, অন্যকে সচেতন করি।