চিকিৎসক সংকটে তাহিরপুর হাসপাতালটি যেন নিজেই লাইফ সার্পোটে
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম অসহায় হয়ে পরেছে ৩লাখ জনসাধারন। একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৩লাখ জনসাধারন চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও হাসপাতালটিতে র্দীঘ দিন ধরেই বিশেষ রোগের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা,কর্মচারীর পদ শূন্যতার কারনে হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগী হয়ে লাইফ সার্পোটে আছে।
এদিকে উপজেলায় চিকিৎসাসেবা আরো একধাপ এগিয়ে নিতে সরকারিভাবেই ৫০শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবন চলতি বছরের ২৫জানুয়ারি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও সুনামগঞ্জ-১এর সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ৫০শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। ডাক্তার-নার্স,স্টাফসহ জনবল দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার মান কিছুটা বাড়বে আশার সঞ্চার হলেও উদ্বোধনের পর তিন মাসেরও বেশি সময় পেয়িয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় আসবাব ও লোকবল সংকটের কারণে উন্নীতকরণের সুফল পাচ্ছে না তাহিরপুরবাসী।
জানাযায়,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩০শয্যা থাকাকালীন ৯জন চিকিৎসকের পদ ছিল। তখনো চিকিৎসক সংকট ছিল। ৫০শয্যায় উন্নীতকরণ হলেও এখনো নতুন কোনো লোকবল নিয়োগ না দেয়ার ফলে এ সংকট আরও চরম আকার ধারণ করেছে।
এই সংকটের মধ্যেই হাসপাতালটির ৩জন ডাক্তারকে অন্যত্র প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ডাঃ তানভীর আনসারীকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পাগলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে,ডাঃ মির্জা রিয়াদ হাসান ও ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় রায়কে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং ডাঃ সাব্বির আহমেদকে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ইউএইচএফপিও ডাঃ ইকবাল হোসেন দাপ্তরিক কাজে বিভিন্ন সময়ে জেলা-উপজেলায় সভা-সেমিনার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে একজন চিকিৎসক ডাঃ সুমন বর্মন কয়েকজন সহকারী মেডিকেল অফিসারগদের সাথে নিয়ে নামে মাত্র রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এবিষয়টি স্বীকার করে ইউএইচএফপিও ডাঃ ইকবাল হোসেন বলেন,ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে ৪জন চিকিৎসক অন্যত্র রয়েছেন। আমি অফিসিয়াল কাজে সভা সেমিনারে প্রায়ই ব্যস্ত থাকি।এদিকে উপজেলার প্রায় ৩লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে একমাত্র চিকিৎসক সুমন বর্মনকে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ সুমন বর্মণ বলেন,প্রতিদিনেই রোগীদের ভিড় বাড়ছে। কিছুই করায় নেই। দুর দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ত বাড়ি ফিড়ে যেতে দিতে পানি আমি যখন একা হলেও আছি। যতটুকু সম্ভব একাই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা থেকে ১০কিলোমিটার দূর বাদাঘাট ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলীনুর মিয়া জানান,হাসপাতালে ভাল কোন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাই। মহিলাদের জন্য কোন গাইন ডাক্তার হাসপাতাল নির্মানের পর থেকে না থাকায় মহিলরা চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন। এছাড়াও দাঁেতর ডাক্তার,এক্সরে,ল্যাবটেকনেশিয়ানসহ বিভিন্ন পদে শূন্যতার কারনে বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয় আমাদের।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন,তাহিরপুরে কমর্রতের প্রেষণে বদলির আদেশ বাতিল করে মূল কর্মস্থলেই জনসাধারনের সুচিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে এর সমাধান করবেন বলে জানান তিনি।