উল্লাপাড়ায় পরিশ্রম আর পরিচর্যায় সফল পটলচাষী ফকির জয়নাল
সাহারুল হক সাচ্চু, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)
এইতো বছর দেড়েক আগে হিসেব কষে দেয়া হয়েছিল লোকসান হবে। খরচের এক টাকাও তার ঘরে আসবে না। ফকির জয়নাল কোন ফকিরিতেও সফলতা মেলাতে পারবেনা এমন সব কথা লোক মুখেই থেকেছে। যারাই বলেছে তারাই হেরেছে। কৃষক ফকির জয়নালের পটল চাষে সফলতা মেলায় এখন লাভের টাকা প্রতিদিনই ঘরে আসছে। তার সফলতা এখন অন্য কৃষকদেরকেও আগ্রহী করে তুলছে।
উল্লাপাড়া উপজেলার নাগরৌহা গ্রামের প্রায় ষাট বছর বয়সী কৃষক ফকির জয়নাল মিয়া নিজ থেকেই পটল চাষে আগ্রহী হন। তিনি ধান পাটের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি ফসলের আবাদ করে থাকেন। তার আর কোন জমি না থাকায় নাগরৌহা মাঠেই পটল চাষে বাৎসরিক চুক্তিতে ২৫ শতক জমি লীজ নেন। তিনি জানান, ২৫ শতক জমি বাবদ প্রতি বছর ১০ হাজার টাকা জমির মালিকের সাথে চুক্তি করেছেন। প্রায় দেড় বছর আগে নাটোরের আড়ানী এলাকা থেকে পটলের কান্ড এনে এ চাষে নামেন।
নাগরৌহা মাঠ সহ আসে পাশের মাঠ গুলোর মধ্যে তিনি প্রথম এর চাষ শুরু করেছেন। তার ফসলের চাষ দেখে এলাকার কৃষক শ্রেণির লোকজন নানা মন্তব্য করতে থাকেন। এর আবাদে লাভতো দুরের কথা খরচের একটি টাকাও তার ঘরে আসবে না এমন চ্যালেঞ্জও নাকি দু’একজন দিয়েছিলেন বলে জানান।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে ফকির জয়নাল আরো জানান, কেউ তাকে উৎসাহ দেয়নি। যে যাই বলুক তিনি সব কিছুই মুখ বুঝে সহে এর পিছনে কঠোর পরিশ্রম আর পরিচর্যা করেছেন। এর আবাদে তিনি সফল হয়েছেন। জমি লীজের টাকা বাদে পরিচর্যা, দিন মজুরীর দাম ও অন্যান্য খাতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
গত মাস ছয়েক হলো তিনি প্রায় দিনই পটল তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। এখন প্রতিদিন তিনি ২০ থেকে ২৫ কেজি করে পটল তুলছেন। তার কাছে এখন অন্য কৃষকরা এর আবাদে সহযোগিতা চাইছেন বলে জানান।
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খিজির হোসেন প্রামানিক জানান, পটল ফসলের রোগ বালাই কম হওয়ায় কীটনাশক জাতীয় ঔষধের পিছনে খরচ খুবই কম হয়। একবার পটলের চারা লাগানোর পর টানা দীর্ঘদিন ফসল মেলে। তার বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পটল চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়ে থাকে।