শ্রীপুরে পোল্ট্রি খামারীদের মানববন্ধন
টি.আই সানি,গাজীপুর Channel 4TV :
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারীরা মানববন্ধন করেন।
শনিবার সকাল ১১ টায় শ্রীপুরের মাওনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মাওনা পোল্ট্রি ফিড ও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয় শ্রীপুরের সকল পোল্ট্রি খামারী ও তাদের সাথে জড়িত সকল অঙ্গ সংগঠনের লোকজন। এ সময় তারা গায়ে কাফনের কাপড় পড়ে মহাসড়কে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে ডিমের দাম বাড়ানোর জন্য মৌন মিছিল করেন। মৌন মিছিল শেষে তারা প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও মিছিল করেন। পরে তারা মহাসড়কে কয়েকশ ডিম ছুঁড়ে ফেলে ভেঙ্গে দু:খ প্রকাশ করেন। মিছিল শেষে খামারীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা ডিমের দাম বাড়াতে জোরালো বক্তব্য রাখেন। বাচ্চার দাম, খাদ্যের দাম ও ঔষধের দাম কমাতে হবে, সহজ উপায়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে হবে এবং তাদের বিশেষ দাবী ছিলো বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কখনই ডিম ও মাংস উৎপাদন করতে পারবে না।
পোলট্রি খামারীদের তথ্য মতে,বর্তমানে ১টি ডিম উৎপাদন করতে খরচ হয় ৬ টাকা কিন্তু গত ৬ মাস যাবৎ সাদা ডিম পাইকারী বিক্রি করতে হচ্ছে ৩ টাকা ৭০ পয়সা, লাল ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে ৪ টাকা ৫০ পয়সা। প্রতিনিয়তই তাদের লোকশানের পরিমান বাড়ছে। এমতাবস্থায় দেশের এই বৃহৎ শিল্পকে বাচাঁতেই শ্রীপুরের সকল খামারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেয় ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শ্রীপুর এগ্রোভেট দোকান ও মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক উজ্জল মিয়া বলেন, আমার খামারে ৬০০০ হাজার মুরগী রয়েছে । প্রতি ডিমে আমার উৎপাদন খরচ হচ্ছে ৬ টাকা কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ৩ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে। অর্থ্যাৎ প্রতিটি ডিমে আমাকে প্রায় অর্ধেক লোকশান গুনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাকে ছেলেমেয়ে নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে ।
মাওনা পোল্ট্রি ফিড ও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, বড় বড় হ্যাচারী মালিকদের কারণেই আজকে প্রান্তিক খামারীদের এই দূর্দশা। হ্যাচারী মালিকরা সরকারী নিয়ম না মেনেইে বাচ্চার দাম ইচ্ছে মতো বাড়ানো এবং ডিম উৎপাদন করছে যার ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীরা ধ্বংসের মুখে।
মাওনা পোল্ট্রি ফিড ও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জামাল উদ্দীন ফরাজি বলেন, প্যারাগন, সিপি বাংলাদেশ লি:, কাজী ফার্মস,নারিশ ও আফতাব এই সমস্ত বড় বড় হ্যাচারী মালিকরা নিজেরাই বাচ্চা ও খাবারসহ সব কিছু তৈরী করে। তারা যখনই একেকজনে ১০-২০ লাখ মুরগী পালন করে ডিম ও মাংস উৎপাদন শুরু করলো এতে ডিমের দাম কমলেও তাদের পর্যাপ্ত পরিমান লাভ থাকে নিজেদের সব কিছু ব্যবহার করার কারণে। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীদের ওই সমস্ত হ্যাচারী মালিকদের কাছ থেকে বাচ্চা, মেডিসিন ও খাবারসহ সব কিছুই কিনার ফলে তারা লাভের দ্বারের কাছেও পৌছতে পারছে না। তিনি দেশের এই বৃহৎ অর্থনৈতিক শিল্পকে বাচাঁতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ হস্তক্ষেপ কামনা করেন।