শ্রীপুরে এই প্রথম (সঃ) প্রাথমিক স্কুলে শ্রেণিকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন
টি.আই সানি,শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি Channel 4TV :
খুনসুটি করতে করতে খুদে পড়ুয়ারা নিজেদের মধ্যে কখনও মারপিটেও জড়িয়ে পড়ে। সহপাঠীর খাতা-পেনসিল খোয়া গেলে শুরু হয় হইচই। পাাঠদানের সময় অমনোযোগী পড়ুয়াকে চিহ্নিত করাও খুব সহজ কাজ নয়। এমনকি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের ভূমিকা কতটা ও কেমন ভাবে পালন করেন তার মূল্যায়নও বেশ কষ্টকর বিষয়।
এমন নানা সমস্যার সমাধানের পথ নিজেরাই বাতলেছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকশিক্ষিকারা।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ টি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের টাকায় ইতিমধ্যে ৪ টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসিয়েছেন।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মাঈন উদ্দিন বলেন, “অপ্রীতিকর কোনও ঘটনার দায় কোনও পড়ুয়া অস্বীকার করে মিথ্যা বললে তাকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ঘটনার রিপ্লে দেখানো হবে। তখন সে নিজের ভুল বুঝতে পারবে। তার ফলে শিশুমনে প্রথম থেকেই মিথ্যা বলার প্রবণতা কমবে ও সঠিক ভাবে সে গড়ে উঠবে। তাছাড়া শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকশিক্ষিকার অনুপস্থিতির সময় স্বতঃস্ফূর্ত আচার আচরনের মধ্য দিয়ে শিশুর স্বাভাবিক স্ফূরণের পরিচয় মিলবে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ছবি থেকে। সেই কারণেই এমন উদ্যোগ।”
নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজাহার আলী বলেন, সিসিটিভি, ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেম এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি। কোনওরকম সরকারি সাহায্য ছাড়াই ছাত্রছাত্রীদের শৃঙ্খলরক্ষা, পঠনপাঠন ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিতি নজরে রাখতে এমন ব্যবস্থা চালু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাস কয়েক আগে স্কুলেও সিসিটিভি বসিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। পরে তা মিটেও যায়।
তবে নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগকে অবশ্য সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কর্মকাÐের নেপথ্যে রয়েছে ওই বিদ্যালয়ের দীর্ঘ ইতিহাস। শিক্ষকদের উদ্যোগে সে দিনের কুঁড়েঘরের বিদ্যালয় আজকের ত্রিতল পাকাভবনে উন্নীত হয়েছে। নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-কারী শিক্ষক মহসিন আলম বলেন, সব কৃতিত্বই এই বিদ্যালয়ের-সহ মোট সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকার। তবে ৩য় শেণীর ২টি শাখার ১২০ ছাত্র/ছাত্রীর বসার জন্য বেঞ্জ নেই,তাদের বর্তমানে স্কুলের রুমে ফ্লোড়ের মধ্যে বসে ক্লাশ নিতে হচ্ছে।
সাবেক মেম্বার মকবুল হোসেন ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,শিক্ষকদের উদ্যোগে সরকারি ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের মান ও শিক্ষকশিক্ষিকাদের আচরণে আকৃষ্ট হয়ে ৫-৬ কিলোমিটার দূরের ৭টি গ্রামের দিন-আনা দিন-খাওয়া পরিবারের সস্তানদের ভিড়ে ঠাসা ওই বিদ্যালয়।
প্রধানশিক্ষকও বলেন,ছাত্রছাত্রীর অধিকাংশই দূরদূরান্তের বিপিএলের তফসিলি ও সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫ টি শ্রেণির ওই বিদ্যালয়ে খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে রয়েছে খুদের নিয়ে নিয়মিত ক্যুইজ, বিতর্ক ও তাৎক্ষণিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সহ-শিক্ষকদের অবদান অতুলনীয়। নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে মডেল হিসাবে তুলে ধরে জেলার অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুপ্রাণিত করা হবে।