সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা লোপ পাচ্ছে: ঢাবি উপাচার্য
সাংবাদিকতায় আগের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা বাড়লেও বস্তুনিষ্ঠতা লোপ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘সম্পাদক বজলুর রহমান স্মারক বক্তৃতা ২০১৭’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপাচার্য আক্ষেপ করে বলেন, পূর্বে সাংবাদিকতা পেশায় সুযোগ-সুবিধা কম থাকলেও বস্তুনিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু এখন এ পেশায় অনেক সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে, তবে বস্তুনিষ্ঠতা কমেছে।
প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের ৭৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ‘মিডিয়ায় প্রযুক্তি ও পুঁজির ছায়া: অংশীদারিত্ব, পেশাদারিত্ব ও প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ও নিরহঙ্কার, নির্লোভ ব্যক্তি ছিলেন। অজ্ঞতা, অন্যায় ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন তিনি।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। সাংবাদিকতা পেশায় এধরনের মানুষেরই দরকার।
তিনি বলেন, মিডিয়ায় প্রযুক্তি ও পুঁজির অনুপ্রবেশের কারণে সাংবাদিকতার মূল্যবোধ যেন বিকিয়ে না যায় সে ব্যাপারে প্রয়াত এই সাংবাদিক গণমাধ্যমকর্মীদের সতর্ক করতেন। তিনি বজলুর রহমানের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চায় শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের ভুল তথ্য ও অপতথ্যের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে গণমাধ্যমে অপতথ্য দেওয়া উচিৎ নয়। অপতথ্য দিয়ে প্রধান শিরোনাম করা হলে একই ধরণের ট্রিটমেন্ট দিয়ে প্রতিবাদ ছাপানো উচিৎ। সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক আসাদুজ্জামান কাজলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর ও বজলুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।