টঙ্গীতে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে কারনে মরে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ মৎস্য চাষিরা সর্বশান্ত
মো.রবিউল ইসলাম টঙ্গী : টঙ্গীতে ভিয়েলাটেক্স কারখানা থেকে নির্গত কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে মৎস্য খামারের কয়েক লাখ টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে। আজ সোমবার সকাল থেকে মৎস খামারের মাছ মরে ভেসে উঠতে শুরু করে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হওয়ার আগেই পানিতে থাকা ব্যাঙ, সাপ, পোকা-মাকড়ও মরতে শুরু করে। পানিতে নামলেই শরীর চুলকানি ও জ্বালাপোড়া শুরু হয়। বিষাক্ত কেমিক্যালের ঝাঁঝালো গন্ধ ও দুষিত পানি পায়ে লাগার কারণে স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রী, পথচারি ও গার্মেন্টকর্মীরা ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বর, এলার্জি, খুশপাচড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
মৎস্য চাষি মনির হোসেন, মো. জামাল হোসেন, মিন্টু মিয়া ও ওয়াশিম ক্ষোভের সাথে বলেন, আমরা বিগত ৮ বছর যাবত ১০বিঘা পুকুর লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করে আসছি। গত আট মাস আগে প্রায় ৭ লাখ টাকার বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা মৎস্য খামারে ছেড়েছি। মাছগুলো কেবল খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। আগামী জানুয়ারি মাসে ইজতেমার সময় বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু ভিয়েলাটেক্স কারখানার নির্গত কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত বর্জ্য মৎস্য খামারে ফেলায় সবগুলো মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এর পূর্বেও ওই কারখানার বিষাক্ত পানি খামারে প্রবেশ করে অনেক মাছ মরে গিয়েছিল। তখন আমরা তাদেরকে বিষাক্ত পানি বন্ধের অনুরোধ করি। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পুণরায় তারা বিষাক্ত পানি ছেড়ে আমাদের খামারের সবগুলো মাছ মেরে ফেলেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।
এব্যাপারে এলাকার মুরুব্বি নুরুল আমিন (৬৫) বলেন, ভিয়েলাটেক্স কারখানার বিষাক্ত কেমিক্যালের বিক্রিয়ায় আমার ঘরের টিনের চালা ঝাঝড়া হয়ে গেছে এবং আমার প্রতিবেশী কয়েকটি শিশুর ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ভিয়েলাটেক্স কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের নিজস্ব ইটিপি রয়েছে। আমরা পানি পরিশোধন করেই কেবল ড্রেনে ছাড়ি। অপরিশোধিত পানি ড্রেনে ফেলা হয় না।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. পারভেজ হোসেন বলেন, ডাইং কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যে প্রচুর পরিমাণে রোগ জীবানু থাকে। এগুলো মানুষের শরীরে লাগলে খুশপাচড়া, জ্বর, আমাশয়, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, কিডনী সমস্যা, লিভার সমস্যাসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে।