শহরের প্রান কেন্দ্রে বসবাস করেও মধ্য- যোগীয় 'মানবেতর' জীবন যাপন করছে-জয়পুরহাট শহরের-বঙ্গবন্ধু রোডের হিন্দু সম্প্রদায়ের ১২ পরিবার।
শামীমা রাফী জয়পুরহাট:- জয়পুরহাট শহরের প্রান কেন্দ্রে বসবাস করেও ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা সকল প্রকার আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বন্চিত-ভিটাপাড়ায় বসবাসরত প্রায় অর্ধ-শতাধিক মানুষ।
আজ ২৫ অক্টোবর(বুধবার):সরেজমিনে-গিয়ে দেখা গেল-পাড়ার
নাম-ভিটা পাড়া। জয়পুরহাট জেলা সদরে অবস্থিত জয়পুরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফেসর পাড়ার বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত-ছোট দ্বীপন্যায় চারদিকে পানি মাঝে ১০/১২ টি মাটি ও টিন দিয়ে তৈরী হিন্দূ সম্প্রদায়ের কিছু অসহায় ও ভুমিহীনদের বাড়ি। এই কটি বাড়ি নিয়েই ভিটাপাড়া।
জানাযায়-১৯৬০ খ্রি: এর আগে থেকে আজ ২০১৭ খ্রি: প্রায় ৬০-৬৫ বছরেও এ পাড়া এবং এই পাড়ায় বসবাসকারি বাসিন্দাদের ভাগ্যের কোন পরির্বতন হয়নি।
এখানে বসবাসকারির প্রায় অর্ধেকেই প্রাইমারি থেকে স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র/ছাত্রী হলেও আজও এখানে নেই কোন বিদ্যুৎতের ব্যবস্থা। পাড়ার চার পার্শ্বে রাতে আলো ঝলমল করলেও তাদের থাকতে হয় অন্ধকারে-পড়াশুনা করতে হয় হারিকেনের আলোয় বলে দূঃখ প্রকাশ করলো নিত্যলাল রাজভরের ২য় ছেলে স্নাতন ৪র্থ বর্ষের ছাত্র রবি রাজভর(২৩)। সে বলে-আজও আমরা যারা পড়াশুনা করছি তা হারিকেনের আলোতেই। সে আরো জানায়-শুধু বিদ্যুৎতের আলোর অভাবে আমার ৩ ভাইবোনের মাধ্যমিক পাস করা হয় নাই।
শুধু আলো কেন আমাদের পরিস্কার পানযোগ্য পানি, স্বাস্থ্য সম্মত্য পায়খানা, মা/বোনদের পর্দার সহিত গোসল আর স্থাস্থ্য সম্মত্য টয়লেটের ব্যবস্থা পর্যন্ত নাই বলে জানান-শীবু রাজভর(৫২) এর স্ত্রী ও কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের শিক্ষিকা জয়ন্তী রানী রাজভর(৩৫)।
এখানে জন্ম ও বসবাসককারি আর এক বাসিন্দা লালচাঁন রাজভর(৫৫) জানায়- যায়গা দানকারি মৃত্যু: আব্দুর রউফ মুন্সির উত্তরসূরিদের মধ্যে জমি নিয়ে মামলা চলছে বিধায়-আমরা কোন সুযোগ সুবিধা নিতে চাইলেও মৃত্যু:আব্দুর রউফ মুন্সির চার ছেলের উত্তরসূরিদের মধ্যে শুধু বড় ছেলে মৃত্যু:আব্দুস সামাদের বড় ছেলে মো:জাভেদ ইকবাল আরমান ও তার মা,বোন,বোন-জামাই এসে বাধাঁ দেয়।যেমন গত কাঁলী পূজার আগে জয়পুরহাট পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত একটা গভীর নলকূপ আমার বাড়ির পূর্বদিকে বসাতে চাইলে তিন উত্তরসূরির কেউ বাঁধা প্রদান বা নিষেধ না করলেও আরমান-তার মা ও বড় বোন গিয়ে বাঁধা প্রদান করে, এই অজুহাতে যে এই জমি নিয়ে আমাদের সরিকদের মধ্যে মামলা চলছে। যতদিন মামলার একটা রায় বা ফলাফল হচ্ছে না-তা যে পক্ষেই হোক না কেন-তারপর সে পক্ষ আপনাদের ব্যপারে যে সিদ্ধান্ত নিবে তা আমরা সবাই মেনে নিবো।
অথচ বাঁকী তিন ছেলের(মরহুম:সাগির,মরহুম:ডাঃশরী
এই কথাটির সত্যতা স্বীকার করে মাস্টার সাহেবের পরিবারের বর্তমান জীবত,বয়স্ক, পুরাতন ও প্রথম বউমা ও ডাঃশহীদ হোসেনের মা-জুলেখা বেওয়া জানান- মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই আমার শশুড় মরহুম:আব্দুর রউফ মুন্সি(মাস্টার সাহেব) যায়গাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের বর্তমান বসবাসকারি পরিবার প্রধানদের পূর্ব পূরুষদের অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য দান করেছিলেন।
তাই আমি ও আমার দূই জাঁ-মৃত্যু:ডাঃশরীফের স্ত্রী ও ডাঃখালিদ-বীন-শরীফের মা সমাজসেবিকা সাজেদা শরীফ(৫৮) এবং মৃত্যু:সমী আহম্মেদের স্ত্রী সহ আমাদের তিন পরিবারের সকল উত্তরসূরি চাই-আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সহীত-ই বাস করুক ভিটাপাড়ায় বসবাসকারিরা।
মরহুম:মাস্টার সাহেবের ২য় সন্তান মৃত্যু: সাগির হোসেনের স্ত্রী ও ডাঃ শহীদ হোসেনের মা-জুলেখা খাতুন(৬৫) আরো জানান-১৯৬০-৬২ খ্রি: আমার বিয়ে হয় এবং আমি মরহুম:আব্দুর রউফ মুন্সি সাহেবের পরিবারে প্রথম বউমা।
সুতরাং এই পাড়ার অবহেলার কারন ও প্রকৃত মালিক-কে? সহ যাবতীয় তথ্য আমি ভালো ভাবেই জানি।
বঙ্গবন্ধু সড়কে বসবাসরত-স্থায়ী বাসিন্দা, ভিটাপাড়ায় বসবাসকারি নবীন ও প্রবীন বাসিন্দা এবং এই যায়গা দান কারি মৃত্যু:মরহুম আব্দুর রউফ মুন্সি ওরফে মাস্টার সাহেব এর চার ছেলে মরহুম:আব্দুস সামাদ, মরহুম:সাগির হোসেন, মরহুম:ডাঃশরীফ, মরহুম:সমি আহম্মেদের উত্তরসূরিদের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা গেল এই পাড়া এবং এই পাড়ায় বসবাসকারি প্রায় অর্ধ-শতাধিক বাসিন্দাদের মধ্যযুগীয় জীবন-যাপনের কিছু সত্য ঘটনা।
যার কারনে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্বেও ভিটাপাড়া তথা এখানে বসবাসকারি বাসিন্দাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় আনতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার, বলেও মনে করেন এই সড়কের গন্যমান্য ব্যক্তি ও ভিটাপাড়ার বাসিন্দারা।
আজ ২৫ অক্টোবর (বুধবার):সরেজমিনে দেখা গেল- এখানে নিত্যলাল(৫৫) ও তার পরিবার, শীবু রাজভর(৫২) ও তার পরিবার, গোবিন্দ রাজভর(৫৫) ও তার পরিবার, লালচাঁন রাজভর(৫২) ও তার পরিবার, সিতারাম রাজভর(৫৫) ও তার পরিবার, পুনসিয়া রাজভর(৫৮) ও তার পরিবার, কান্চন রাজভর(৪৫) ও তার পরিবার, মোহন রাজভর(৩৫) ও তার পরিবার, বিষু রাজভর(৬৫) ও তার পরিবার, দাইয়া(৬৫) সহ প্রায় ৪৭ জনের বসবাস যার মধ্যে প্রাথমিক থেকে স্নাতক ক্লাসের ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা-১৪ জন। যারা প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত এসেছে হারিকেনের আলোতে পড়াশুনা করে।
বাসিন্দাদের কথা মতে মানুষের মৌলিক ও বর্তমান যুগের সুযোগ সুবিধা বন্চিত গ্রাম বাংলাদেশে খুজে পাওয়া মুশকিল হলেও শুনে ও দেখে জয়পুরহাট শহরের সচেতন নাগরিক আর্চাষ!! এই শহরের প্রানকেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত ভিটা পাড়া নামক দ্বীপন্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাড়াটি । তাদের জীবন যাপন এখনও মধ্যযুগীয় বলে জানান জয়পুরহাট শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের বসবাসরত সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
এক প্রশ্নের জবাবে মো:মাহাবুব আলম-পরিচালক-মৌনবিনা-জানান-আধু
তিনি আরো জানান-আমি ১৯৯০-৯২ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কে পরিবার সহ বসবাস করে আসছি, এই সড়কের মৃত্যু:প্রফেসর জহির উদ্দিনের বাসায় আমার একমাত্র কন্যার জন্ম। বর্তমান সে ঢাকায় এক বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত ৩৫ বছরেও কোন পরিবর্তন আমার চোখে পড়ে নাই এই ভিটাপাড়ায় বসবাসরত মানুষদের।
তবে ভিটা পাড়ায় বসবাসকারী বাসিন্দাগনকে বলতে শুনেছি- মাস্টার সাহেব বেঁচে থাকলে তাদের এই দূর্দশায় থাকতে হতো না।
বঙ্গবন্ধু সড়কে স্থায়ীভাবে প্রায় ৫৫ বছর ধরে বসবাসকারী আর একজন বাসিন্দা আসাদুজ্জামান পিন্টু (৫৫) বলেন-আমার জন্ম এই সড়কের বর্তমান আমার পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া বাসায়। সেই ছোট বেলা থেকেই এই পাড়ার বাসিন্দাদের অ-পরির্বতিত জীবন যাপন দেখে আসছি। আমার বাবার কাছে শুনেছি- মৃত্যু:বাল্লি রাজভর,মৃত্যু:সুখ নন্দন রাজভর,মৃত্যু:চানকা প্রসাদ রাজভর,বিশু রাজভর,মৃত্যু: বুধু রাজভর সহ বেশ কিছু হিন্দু অসহায় ও ভুমিহীন পরিবারকে ১৯৬০-৬৫ খ্রি: এরও পূর্ব থেকেই অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য দান করেন-মরহুম ডাঃ শরীফ ও তার তিন ভাইয়ের মরহুম পিতা:আব্দুর রউফ মুন্সী ওরফে মাস্টার সাহেব।
বঙ্গবন্ধু সড়কের ভিটাপাড়া নামক হিন্দূ সম্প্রদায়ের নিত্যলাল রাজভর লেবুর(৫৫) পরিবার সহ ১২ পরিবারের প্রায় অর্ধশতাধীক মানুষ বসবাস করে। যার মধ্যে পুনিশীয়া রাজভর(৫৫) এর দূই মেয়ে ও এক ছেলে স্নাতক শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রী এবং বড় ছেলে স্নাতকের পর একটি বে-সরকারি ব্যাংকে চাকুরি করছে-তিনি আরো বলেন এই আধুনিক যুগে বাস করেও তারা সবাই হারিকেনের আলো দিয়েই ক্লাস ওয়ান থেকে এই পর্ষন্ত এসেছে।
শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছা ও চেষ্টায় বলে জানান-বঙ্গবন্ধু সড়কের স্থায়ী বাসিন্দা মাহাবুব হোসেন(৫০)।
এছাড়াও নিত্যলালের পরিবারে তার মেজ ছেলে-স্নাতকে, শিবু লাল রাজভরের পরিবারে তার একমাত্র মেয়ে এবার এসএসসি পরিক্ষার্থী, গোবিন্দ লাল রাজভরের পরিবারে তার ছোট ছেলে ক্লাস সেভেন, লালচাঁন রাজভরের পরিবারে তার তিন ছেলে/মেয়ে ক্লাস ফাইফ থেকে স্নাতক পর্যন্ত, কান্চন রাজভরের পরিবারে তার দুই ছেলে/মেয়ে প্রাইমেরী স্কুল এবং সিতারাম রাজভরের পরিবারে তার মেঝ ছেলে হাইস্কুলে পড়াশুনা করে আসছে শুধুমাত্র হারিকেনের আলোয় ও গরমে গরম সহ্য করে।
দীর্ঘ ৬০-৬৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন বলে জানান-ভিটা পাড়ায় ছোট বেলা থেকে যৌবন এখন বৃদ্ধ বয়সী বিশু সরদার (৭০)। তিনি জানান আমার বাবা স্বর্গীয়:বুধু রাজভর সহ আমরা ৭ ভাই/বোনকে ১৯৬০ খ্রি: এরও আগে মৃত্যু ডাঃশরীফ ও তার মৃত্যু তিন ভাই মৃত্যু:আব্দুস সামাদ(বড়),মৃত্যু:সাগির হোসেন(মেঝ), মৃত্যু:ডা:শরীফ(সেজ) এবং ছোট মৃত্যু:সমি আহম্মেদের বাবা এবং বর্তমান মৃত্যু:আব্দুস সামাদের বড় ছেলে জাভেদ ইকবাল আরমান ও তার ভাই/বোন, মৃত্যু:সাগির হোসেনের বড় ছেলে ডা:শহীদ হোসেন-উপজেলা হেল্থ এন্ড ফ্যামিলিপ্ল্যানিং অফিসার-পাঁচবিবি-জয়পুরহাট এবং তার ভাই/বোন, মৃত্যু:ডা:শরীফ এর বড় ছেলে ডা:খালিদ-বীন-শরীফ-পরিচালক-সাজ চিকিৎসা কেন্দ্র-জামালগন্জ সড়ক-জয়পুরহাট এবং তার ভাই/বোন এবং মৃত্যু: সমি আহম্মেদ এর বড় ছেলে এখলাক আহম্মেদ এবং তার ভাই/বোনের পিতামহো:মৃত্যু:আব্দুর রউফ মুন্সি(মাস্টার সাহেব হিসাবে এলাকায় পরিচিত) দান করেন অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আমার বাবা স্বর্গ্বীয়: বুধু রাজভর ও অসহায়-ভূমিহীন ১০/১২ টি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারকে।
১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের সময় প্রান ভয়ে আমরা ভারতে পালিয়ে যাই-যুদ্ধ শেষে আবার বাংলাদেশে ফেরৎ এলে-যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত্য আমাদের বাড়ি মেরামতের জন্য নিজ তহবিল থেকে টাকা দিয়ে আমাদের পূ্নর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেন এবং প্রায় ৩/৪ মাস আমাদের তিন বেলা আহারের ব্যবস্থা করেছিলেন। ভগবান তাকে স্বর্গবাসি করুন-বলেন জানান এই পাড়ায় বসবাসকারি পুনসিয়া রাজভর(৫৮)।
আর এক বাসিন্দা গোবীন্দ রাজভর (৫৫) জানান- আমি জানি আমার বাবা/মা -সহ প্রায় ১০/১২ জন পরিবারকে মৃত্যু:আব্দুর রউফ মুন্সী এই যায়গা দান করেছিলেন বসবাস করার জন্য। সেই থেকে আমি এখানে বসবাস করে আসছি। এখানে ছোট থেকে বৃদ্ধ হলাম। কিন্তু দূঃখের বিষয়, প্রথম শ্রেনীর পৌর সভায় বসবাস করেও আমরা আজও বিদ্যূৎ, পরিষ্কার পানযোগ্য পানি, স্বাস্থ্য সম্মত্য পায়খানা, মা/বোনদের পর্দার সহিত গোসল ও থাকার ব্যবস্থা পর্যন্ত থেকে বন্চিত।
ভিটা পাড়ায় বসবাসকারী আর এক বাসিন্দা দাইয়া(৭০) জানান-আমার ছোটবেলা থেকে বুড়ি হয়ে গেলাম এই পাড়ায় কিন্তু আজও থাকতে হয় অন্ধকারে,গোসল করতে হয় খোলা যায়গায় এবং টয়লেট করতে হয় খোলা টয়লেটে। তিনি আরো জানান শুনেছি-ডাঃ শরীফ সাহেব ও তার মৃত্যু দূইভাই সাগির হোসেন ও সমি আহম্মেদের উত্তরসূরিদের সাথে মরহুম: আব্দুস সামাদের উত্তরসূরিদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বাটোয়ারা মামলা চলায় আমরা সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বন্চিত।
বিস্তারিত জানতে চাইলে মৃত্যু:আব্দুর রউফ মুন্সি(মাস্টার সাহেব) এর উত্তরসূরিদের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার জয়পুরহাট প্রথম শ্রেনীর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের প্রফেসার পাড়ায় অবস্থিত ভিটাপাড়া নামক বস্তিতে মৃত: ডা: শরীফের পিতা ও বর্তমান ডাঃ খালিদ-বীন-শরীফ, সাজ চিকিৎসা কেন্দ্র, ডাঃ শহীদ হোসেন,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার,পাঁচবিবি,জয়পুরহাট সহ আরো ওয়ারিশগনের পিতামহো মৃত: আব্দুর রউফ(মাস্টার সাহেব হিসাবে জয়পুরহাটে পরিচিত) ১৯৬০ খ্রি: এর আগে থেকেই কিছু অসহায় ভূমিহীন হিন্দু সম্প্রদায়কে থাকার জন্য দান করেছিলেন বলে জানালেন- আরো নাম জানাতে ইচ্ছুক না- এমন ১০/১২ জন বঙ্গবন্ধু সড়কের স্থায়ী সচেতন বাসিন্দা ও ভিটাপাড়ায় বসবাসরত প্রবীন বাসিন্দাগন।
শ্রী:কান্চন রাজভর জানান- আমার বর্তমান বয়স ৪৫ বছর আমার জন্ম এই ভিটাপাড়ায়। আমার ছোট বেলা থেকে আমার বাবা/মা,মামাদের কাছে(পুনশীয়া,বিশু) শুনে এসেছি এই যায়গা আমাদের বসবাস করার জন্য ১৯৭১ সালের যুদ্ধের আগে *নানা* (মরহুম:আব্দুর রউফ মুন্সি) দান করেছিলেন। সেই থেকে আমরা এখানে বসবাস করে আসছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মো:ওয়াজেদ আলী,উপাধাক্ষ্য (অব:) জানান-বর্তমান যে যায়গায় হিন্দু সম্প্রদায় বসবাস করে তা মরহুম:ডাঃ শরীফ, সাগির হোসেন,আ:সামাদ ও সমি আহম্মেদের পিতা:মরহুম:আব্দুর রউফ (মাস্টার সাহেব) গত ১৯৬০-৬২ খ্রি: এরও আগে অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য দান করেছিলেন বলেই আমি জানি। তাছাড়া আমি গত প্রায় ৪০-৪৫ বছর আগে জয়পুরহাট শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে যায়গা কিনে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছি। আমার বাসা ও উল্ল্যেখিত ভিটা পাড়া সবচেয়ে কাছে এবং কাছের প্রতিবেশী হিসাবে এও জানি যে বর্তমান হিন্দু সম্প্রদায় যে যায়গায় বসবাস করে আসছে তা মৃত্যু: আব্দুর রউফ মুন্সি তাদের দান করেছিলেন-অস্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। কিন্তু বর্তমান মাস্টার সাহেবের উত্তরসূরিদের মধ্যে জমিজমা ভাগ/বাটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল চলছে যা এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তিনি আরো জানান-ভিটাপাড়ার উন্নতজীবন যাপনে সব-সময় বাঁধা প্রদান করে আসছে মো: জাভেদ ইকবাল আরমান ও তার মা।
জমি নিয়ে দূ-পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকদফা কথা কাটা-কাটি পর্যন্ত হয়েছে।
এ ব্যপারে মো:জাভেদ ইকবাল আরমান ও তার পরিবারের সাথে কথা বলতে চাইলেও তারা তা নাকচ করে।
এ-দিকে আর এক উত্তরসূরী ডাঃশহীদ হোসেন এবং ডাঃ খালিদ-বীন-শরীফ ও তার মা-ভাইবোনদের সাথে কথা বলে এই পাড়ার মধ্যযুগীয় জীবন ও শরিকদের মধ্যে যে মামলা চলছে-যার কারনে এই পাড়ার কোন উন্নয়ন হচ্ছে না বলে মনে করেন এ পাড়া তথা এই সড়কের স্থায়ী বাসিন্দারা তা পরিস্কার ভাবে উঠে এসেছে।
ডাঃশহীদ হোসেন জানান-আমি এ পরিবারের সবচেয়ে বড় সন্তান। আমার বর্তমান বয়স ৫২ বছর। আমার জন্মের পর থেকেই দেখে ও দাদা/বাবাদের মুখে শুনে এসেছি-ভিটাপাড়ায় বসবাসরত বাসিন্দাদের আমার দাদা মরহুম:আব্দুর রউফ মুন্সি অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য দান করেছিলেন। সেই থেকে আমার দাদার ন্যায় আমরাও তাদের দেখাশুনা ও থাকার ব্যবস্থা করে আসছি।
ডাঃ শহীদ হোসেনের কথার সাথে একমত পোষন করেন ডাঃ খালিদ-বীন-শরীফ ও বাঁকী উত্তরসূরীগন।
ভিটাপাড়ায় বসবাস করার জন্য থাকতে দিলেও মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পাড়ায় বসবাসকারিগন?-এমন প্রশ্নকরা হলে জবাবে-
ডাঃশহীদ হোসেন জানান--আমি বা আমার কোন ভাই/বোন তাদের বসবাস বা মানবেতর জীবন যাপনের ব্যপারে কোন দিনই বাধ্য করা বা বিদ্যুৎ,পানি,ঘর মেরামত সহ কোন কাজেই কোনদিন বাঁধা-প্রদান করি নাই।
আর এক প্রশ্নের জবাবে-ডাঃখালিদ-বীন-শরীফ জানান-বাধ্য করা হচ্ছে ব্যপারটা তা না।
আমার দাদা-মরহুম:আব্দুর রউফ মুন্সি ১৯৮৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর মারা যান। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাদের ভাল/মন্দ,সুখ/দূঃখ সহ যাবতীয় দেখাশুনা তিনি নিজেই করতেন। দাদার অ-বর্তমানে আমার বাবা মরহুম:ডাঃশরীফ সহ বাঁকি দূই চাচারা কাজে-কামে ব্যস্ত থাকলেও আমার বড় চাচা মরহুম:আব্দুস সামাদ বেকার থাকায়-আমার বাবা ও তার তিন ভাই এর সম্মতিক্রমে তাদের বড় ভাই মরহুম: আব্দুস সামাদকে আমাদের পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত শহর ও গ্রামের জমি দেখাশুনার দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং সকল জমির দলিল ও কাগজপত্র তার কাছে গচ্ছিত রাখা হয়।
১৯৮৭ ইং সাল থেকে বড় চাচার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত( তিনি ২০০১ ইং সালে মারা যান) আমরা দেখে এসেছি জমির ফসল থেকে শুরু করে আয়/ব্যয় এর সকল হিসাব তিনি সমান ৪ ভাগে ভাগ করে দিতেন।
এর পর আমার বাবা ও চাচাদের মৃত্যুর পর হঠাৎ করে বড় চাচার বড় ছেলে মো: জাভেদ ইকবাল আরমান ও তার ভাই/বোনরা দাবি করে যে ভিটাপাড়া সহ দাদার প্রায় ৪ বিঘার উপর শহরের জমি তাদের বাবা ও আমার বড় চাচা মরহুম:আব্দুস সামাদের ক্রয়কৃত জমি বলে দাবি করে আসছে এবং ভিটাপাড়ার সকল কাজে বাঁধা-প্রদান করে আসছে।
কিন্তু সে বা তার কোন ভাই বোনেরা বৈধ কোন কাগজ দেখাতে পারে নাই।
এ ব্যপারে আদালতে মামলা চলছে-বলেও তিনি জানান।
আর এক প্রশ্নের জবাবে-মরহুম:ডা:শরীফ এর স্ত্রী এবং ডা:খালিদ-বীন-শরীফের মা সমাজসেবিকা সাজেদা শরীফ জানান-আমার শশুরের দান করা যায়গায় যে হিন্দু সম্প্রদায় বাস করে আমি সহ আমরা ৪ শরীকের মধ্যে ৩ শরীকের কারো কোন প্রকার কাজে বাঁধা প্রদান করি নাই বা করবো না।
একমাত্র আমার বড় ভাশুড়ের(মৃত্যু:আব্দূস সামাদ) ছেলে-মেয়েরা (অবৈধভাবে বাবার ক্রয়কৃত জমি বলে দাবি দারেরাই) ভিটাপাড়ায় বসবাস কারিদের সাধারন জীবন যাপনে বাঁধা প্রদান করে।
ঘটনা যদি তাই হয়-তাহলে স্থানীয় প্রশাসন তথা-জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড:সামছুল আলম দূদূর মাধ্যমে- জয়পুরহাট জেলার-জেলা প্রশাসক,জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান(প্রশাসক),পৌর মেয়র সহ ছোট বড় সকল প্রশাসকগনকে জানাতে ও ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনূরোধ করছি।
বিশেষ ভাবে আরিফুর রহমান রকেট-প্রশাসক-জেলা পরিষদ-জয়পুরহাট এবং মো:মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক-পৌর মেয়র-জয়পুরহাট-মহোদয়কে এ ব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহন-জমির আসল মালিককে চিন্হিত করন এবং আমাদের উন্নত জীবনের ও আমাদের সন্তানদের ভবিষৎ এর কথা চিন্তা করে এই ভিটাপাড়ায় বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা সহ উন্নত জীবনের জন্য সেনেটারি ল্যাট্রিন, গোসলখানা সহ প্রয়োজনীয় মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগীতা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্ন্তগত করার জন্য-এই পাড়ার বাসিন্দা সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জোড় দাবি জানান।