হাকালুকি হাওরে ঢলের পানিতে বোরো ধানের বীজতলা নিমজ্জিত
মৌলভীবাজার থেকে এ.কে.অলক : হাকালুকি হাওরপাড়ের কৃষকের হাহাকার যেন থামছে না। বন্যা, ঝড় আর শিলা বৃষ্ঠিতে গত ২ বছর কৃষকরা এক মুটো ধানও ঘরে তুলতে পারেনি। টানা ২ বছর ফসল হারিয়ে জর্জরিত কৃষক বুক ভরা আশা নিয়ে এবার অগ্রহায়ন মাসের শুরু থেকেই বোরো ধানের বীজ বপন শুরু করেন। কিন্তু বীজতলায় অঙ্কুর গজাতেই পোকার আক্রমনের প্রথম ধাক্কা সামাল দিতে যখন হিমশিম খাচ্ছেন তখনই দেখা দেয় আরেক দুর্যোগ অব্যাহত হালকা ও ভারী বর্ষণ। গত ৩ দিনের বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে বোরো ধানের ব্যাপক বীজতলা। এ দুর্যোগ আরো ২-৩ দিন অব্যাহত থাকলে শতভাগ বীজতলা নষ্ট হয়ে হাকালুকির হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চারার অভাবে বোরো ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
এদিকে কয়েক দিনের হালকা ও ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার প্রায় দেড় হাজার হেক্টরে লাল সাক, মুলা, ধনিয়া, আলু, ফুলকপি, লাউ, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ হয়েছে।
বড়লেখা উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, হাকালুকি হাওরপাড়ের বড়লেখা উপজেলা অংশে এবার ৪ হাজার ৪শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে লক্ষ্যে ২৭০ হেক্টর জমিতে ধানের বীজ বপন করা হয়। প্রায় ৫ হাজার কৃষককে সরকারীভাবে বীজ, সার ও অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
সরেজমিনে তালিমপুর ইউনিয়নের কলারতলীপাড়, বড়ময়দান, খোঠাউরা, দ্বিতীয়ার্দি এলাকায় ব্যাপক বীজতলা ঢলের পানিতে নিমজ্জিত থাকতে দেখা গেছে। কৃষকরা জানান, বিআর ২৮ ও গাজী ১৪ জাতের বীজ বপন করেছিলেন। পৌষ মাসের শুরুতেই চারা রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু প্রথমেই পোকার আক্রমনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারা গত ৩-৪ দিনের বৃষ্টিতে চারা নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন।
উপজেলার বর্নি ইউপি মেম্বার সরওয়ার আহমদ জানান, তার ওয়ার্ডের শতাধিক কৃষক বীজ বপন করেছিলেন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অধিকাংশ বীজতলা তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বিলের পাড়ের বীজতলা সম্পুর্ন তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা রোরোর চারা রোপন নিয়ে চরম হতাশায় ভোগছেন।
বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন জানান, কয়েক দিনের অব্যাহত বর্ষণে সবজির বেশি ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্ঠি হওয়ায় বোরো বীজতলায় ইতিমধ্যে পোকার আক্রমন বন্ধ হয়ে গেছে। বীজতলা ২-৪ দিন পানির নিচে নিমজ্জিত থাকলে চারার তেমন ক্ষতি হবে না। তবে বেশিদিন নিমজ্জিত থাকলে ক্ষতির আশংকা রয়েছে।