পাউবোর সোয়া কোটি টাকার বাধের এবারেও ক্ষতি
সাহারুল হক সাচ্চু উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি
উত্তরাঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে ব্যয় করা সোয়া কোটি টাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের এবারও ক্ষতি হয়েছে। শাহজাদপুরের রাউতারা এলাকায় এ বাধটি কেটে দেওয়ায় চলনবিল অঞ্চলের শাহজাদপুর, উলাপাড়া, তাড়াশ উপজেলা অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা মাত্র কয়েক ঘন্টাতেই বন্যার পানিতে তলিয়েছে। বিভিন্ন সুত্র জানায়, এলাকার নৌকা চালক ও মৎসজীবিরা তাদের স্বার্থে গত শনিবার বাধটি কেটে দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বাঘাবাড়ী-নিমাইচড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের রাউতারা এলাকায় প্রায় ১২শ ৫০ মিটার বাধ গত ক’মাস আগে শুস্ক মৌসুমে পুনঃনির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় এক কোটি ত্রিশ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে পাউবো সুত্র জানায়। গত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে পাউবো থেকে প্রতি বছরই রাউতারা এলাকায় বিপুল টাকা ব্যয়ে বাধটি পুনঃনির্মাণ করা হয়ে থাকে। এ যাবত রাউতারা বাধের পিছনে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। এর মুল লক্ষ্য বন্যার কবল থেকে এ অঞ্চলের কৃষকদের আবাদী জমি ফসল বিশেষ করে ইরি ধান ফসল রক্ষা করা। এদিকে বর্ষা মৌসুমে এলাকার মৎসজীবি ও নৌকা চালকেরা তাদের স্বার্থেই এ বাধ কেটে দেয় নয়তো পানির চাপে ভেঙ্গে গিয়ে রাতারাতি বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। রাউতারায় শুস্ক মৌসুমে বাধ পুনঃনির্মান আর বর্ষাকালে কেটে দেওয়া নয়তো এমনিতেই ভেঙ্গে যাওয়া এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। অনেকেরেই কথা যে এ বাধ ভাঙ্গনে সরকারের কোটি কোটি টাকা জলে ভেসে যায়। যেমন এবার গেছে। সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম জানান, চলনবিল অঞ্চলের ৯ উপজেলার প্রায় ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের শুস্ক আবাদ ও বন্যার কবল থেকে রক্ষায় বাঘাবাড়ী থেকে নিমাইচড়া পর্যন্ত প্রায় ৫৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। রাউতারা এলাকায় বাধ কেটে দেওয়া নয়তো ভেঙ্গে যাওয়ায় পাউবোর প্রতিবছরই বিপুল টাকা ক্ষতি হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে বাধটি পুনঃনির্মাণ করে দেওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা ইরি ধান ফসলের সুষ্ঠ আবাদ ও ফসল ঘরে তুলতে পারছে। এবারে নদীতে বন্যার পানি দেরিতে আসায় কৃষকেরা ভোগান্তি ছাড়াই ধান কাটতে পেরেছে এবং বাথান বলে পরিচিত গোচারণ ভুমিতে হাজার হাজার গরু বেশি দিন থাকতে পেরেছে। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপ কালে তিনি আরো জানান, রাউতারা এলাকায় বাধটি নিয়ে পাউবো থেকে স্থায়ী সমাধানের বিষয় ভাবা হচ্ছে। এ বাধটি আরো উচু ও চওড়া করে নির্মানের বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাধ কেটে দেওয়া কিংবা ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে পাউবোর পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষণ বিভাগ থেকে নজরদারী বাড়ানো হবে। তিনি জোরদিয়ে বলেন বাধটি রক্ষা করা গেলে গোটা চলনবিল অঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের সুষ্ঠ আবাদ ও গোচারণ ভুমিতে বেশি সময় ধরে গরুগুলো রেখে লালন পালন করা যাবে।