নতুন ডুয়েল গেজ রেল লাইন নির্মাণ হচ্ছে ,ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে চুক্তি মঙ্গলবার
ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে দুটি ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে একটি নতুন ডুয়েল গেজ রেল লাইন নির্মাণ হচ্ছে। এর ফলে রাজধানীর সঙ্গে অন্তত আরও আটটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নত হবে। যোগাযোগে সময় কমবে। এই পথে কমিউটার ট্রেনও চালু করা যাবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন রেললাইন স্থাপিত হলে এক ট্রেন দাঁড় করিয়ে অন্য ট্রেনের লাইন ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার চিরাচরিত সমস্যার সমাধান হবে। সিডিউল মতো ট্রেন চলবে। প্রকল্পে অর্থায়ন বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আগামীকাল মঙ্গলবার চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল গেজ রেল লাইন নির্মাণের প্রকল্পে ভারত অর্থায়ন করবে। প্রকল্প দুটিতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ভারতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক এ প্রকল্পে ঋণ দেবে। জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি আরভি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েট আর্কিটেকচার্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং আয়েশা ইঞ্জিনিয়ারিং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরিফুল আলম জানান, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় রেলভবনের যমুনা সম্মেলন কক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, মন্ত্রণালয় এবং ভারতের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, এটি তৈরি হলে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৪-৫ মিনিট অন্তর ট্রেন ছাড়া সম্ভব হবে। ফলে পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। প্রতিদিন ঢাকায় এসে অফিসও করতে পারবেন এসব এলাকার লোকজন।
প্রকল্পটি শেষ হলে এ পথে চলবে একাধিক ট্রেন। কমিউটার ট্রেনও চালু করা যাবে। ফলে টঙ্গী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। যা ওই সব অঞ্চলের মানুষের ঢাকায় কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
গ্রামের বাড়ি থেকে এসে অফিস করতে পারবেন তারা। ট্রেনে জয়দেবপুর থেকে ঢাকা আসতে এখন প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় লাগে। নতুন লাইন নির্মাণ এবং বিশেষ সার্ভিস চালু হলে ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই ঢাকা আসা যাবে।
অন্যদিকে নরসিংদী থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। যেখানে এখন সময় লাগছে দেড় ঘণ্টার মতো।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা শহরের সঙ্গে পাশ্ববর্তী এলাকার রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের সঙ্গে নিরাপদ, উন্নত ও দ্রুত রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-টঙ্গীর মধ্যে বিদ্যমান রেল ট্র্যাকের সমান্তরাল ৪৮ দশমিক ৮০ কিলোমিটার নতুন ডুয়েল গেজ রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে।
অপরদিকে সিগন্যালিংসহ টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে বিদ্যমান রেলপথের সমান্তরাল ১২ দশমিক ২৮ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ হবে।
জানা গেছে, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট এর আওতায় ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ রেললাইন এবং টঙ্গী- জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ড্রয়িং এবং ডিজাইন কাজ শেষ করা হয়।
রেললাইন নির্মাণের দরপত্র গত বছরের ১৬ আগস্ট আহ্বান করে ৩১ অক্টোবর উন্মুক্ত করা হয়। যা মূল্যায়নান্তে বাতিল হয়। পরবর্তীতে গত ১৮ ডিসেম্বর পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়।