আজব হলেও সত্য’ গরু রাখার জন্য আবাসিক হোটেল টাঙ্গাইলে
অন্তু দাস হৃদয়, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইল জেলা ও উপজেলার সকলেরই কম-বেশি ধারনা আছে মানুষ থাকার জন্য আবাসিক হোটেল রয়েছে টাঙ্গাইল শহরে ও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়।
কিন্তু, আজব হলেও সত্য যে টাঙ্গাইলে তৈরি করা হয়েছে গরু রাখার জন্য ‘আবাসিক হোটেল’।
টাঙ্গাইল ভূঞাপুর উপজেলায় গরুর হাট’কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই গরু রাখার ‘আবাসিক হোটেল’।
বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এই গরুর হোটেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরু ব্যবসায়ীরা এখানে গরু রেখে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে অনেক দিন ধরে।
এ দিকে, গরুর এই হোটেল ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী এলাকার শতাধিক পরিবার।
বিশেষ করে ঈদুল আযহা (কুরবানি ঈদ) আসলে গরুর হোটেল ব্যবসা আরো জম-জমাট হয়ে উঠে। প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে এই গরুর হাট।
জানাগিয়েছে, টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর তীরবর্তী টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গ্রামের গরুর হাটকে কেন্দ্র করে হাটের চার পাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক পশুর আবাসিক (বোর্ডিং) হোটেল।
এই গরুর হোটেল গুলোর জন্যই এখানকার হাটে নিরাপদে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া বেচাকেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
অল্প সময়েই ভূঞাপুর উপজেলার এই গোবিন্দাসী গরুর হাট পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম পশুর হাটে।
আর, এই হোটেল গুলোতে গরু রেখে ব্যবসা করতে পেরে খুশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই গরু ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে আবাসিক হোটেল মালিক মো : হাসান মিয়া ও সোনিয়া বেগম বলেন, ‘হোটেলে প্রতি গরুর জন্য ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা ভাড়া নেয়া হয়।
গরু ব্যবসায়ীরা নিরাপদে এখানে গরু রাখেন। আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই এ ব্যবসা করে আসছি।
আমারা এই হোটেলের (গরুর) ব্যবসা করে সংসারে খরচ এর উপর নির্ভরশীল হতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা জানান, হাটের দিন গরু বিক্রি না হলে তখন এই সকল গরুর বোর্ডিংয়ে (হোটেল) এ রাখেন।
এখানে গরুর হোটেল থাকায় আমাদের (ব্যবসা) সুবিধা হচ্ছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু বলেন, ‘হাটের কিছু সমস্যা আছে এগুলোর সমাধান করতে পারলে ব্যবসায়ীরা আরো ভালভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। আর হোটেল মালিকরাও তাদের ব্যবসা করে ভালো জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।’
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবু ঝোটন চন্দ্র জানান, ‘গরুর হাটের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে কাজ শুরু করা হয়েছে। অনেক প্রকল্পের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
এতে করে, ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গ্রামে এখন আরো গরু সরবরাহ বেশি হবে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এই গরু ব্যবসায়ীরা নিরাপদে গরু রাখতে পারবেন।
ফলে, হাটকে কেন্দ্র করে যেমন আরো বেশি গরুর হোটেল তৈরি হবে অন্য দিকে হোটেল ভাড়া দিয়ে এ গ্রামের অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে বলে তিনি জানান।