টিনের চালায় মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র হাতীবান্ধায় ধাত্রীর ভুল চিকিৎসায় নব-জাতকের মৃত্যু
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকায় ফিরোজা বেগম নামে এক ধাত্রীর ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এমন একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নব জাতকের পিতা নুরে এলাহী বাদী হয়ে গত ১৫ আগষ্ট হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ উঠেছে, ওই ধাত্রী ফিরোজা বেগম তার বাড়িতে টিনের চালায় ৩ বছর ধরে মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র খুলে বসেছেন। তার ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় সময় নব জাতকের মৃত্যু হয়ে থাকে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বড়খাতা রেলওয়ে কলোনী এলাকার ফজুল হকের মেয়ে ফিরোজা বেগম নিজেকে একজন দক্ষ ধাত্রী দাবী করে তার বাড়িতে মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র খুলে বসেছে। তিনি তার বাড়িতে নিয়মিত গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসব করা পাশাপাশি বাচ্চা নষ্ট (এম আর) করে থাকেন। গত ৭ আগষ্ট ওই উপজেলা দোলাপাড়া এলাকার নুরে এলাহীর স্ত্রী জেমি বেগমের প্রসব ব্যাথা উঠলে তারা ফিরোজা বেগমের বাড়ি নিয়ে আসে। এক দিন পর ৮ আগষ্ট একটি ছেলে বাচ্চা প্রসব করেন। বাচ্চা জন্মেও পর প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে যায়। পরে নুরে এলাহী মা ও নব জাতককে প্রথম লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল পরে রংপুর মা ও শিশু হাসাপাতলে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগষ্ট ওই নব জাতকের মৃত্যু ঘটে।
নুরে এলাহী অভিযোগ করে বলেন, ধাত্রী ফিরোজা বেগমের ভুল চিকিৎসার কারণেই তার বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। তাকে রংপুর মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জন্মের সময় নব জাতক মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি বিচার চেয়ে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগও করেছেন। কিন্তু ৩ দিনেও পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। উল্টো একটি মহল বিষয়টি মিমাংশা করতে আমাকে চাপ দিচ্ছে।
সড়ে জমিনে দেখা যায়, ধাত্রী ফিরোজা বেগম তার বাড়িতে একটি টিনের চালে মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র খুলে বসেছে। পাশেই নলকুপ ও গরুর মলসহ পচা পানির ডোবা। যার দুন্ধ চার দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সচেতনতার অভাবে গ্রামের দুস্ত লোকজন তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। তার ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় সময় নব জাতকের মৃত্যু হয়ে থাকে। অথচ ফিরোজা বেগমের এ মা ও শিশু সেবা কেন্দ্রের বিষয়ে কিছুই জানেন না উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
ধাত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, বিভিন্ন এনজিওতে মা ও শিশু সেবা নিয়ে চাকুরী করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাড়িতে সন্তান প্রসব করে থাকি। তবে সিভিল সার্জন বা স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো অনুমতি পত্র নেই।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রমজান আলী জানান, বিষয়টি অবগত হয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ফিরোজা বেগমের মা ও শিশু সেবা কেন্দ্র নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নেই।
হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।