সীমান্ত রক্ষীদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে কাঁটা তারের বেড়া টপকিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে নারী
শহিদুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি
নারী পাচার বন্ধ করতে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার মাঠ পর্যায়ে রয়েছে হাজার হাজার কর্মি। সীমান্ত চৌকিতে রক্ষি বাহিনী। তবু ও কাঁটা তারের বেড়া টপকিয়ে দু-দেশের সীমান্ত রক্ষিদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে পাচার হচ্ছে নারী।
দালাল চক্র ভাল কাজ আর চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশের এ সীমান্ত দিয়ে। পাচার হওয়া নারীরা মোটা অংকের টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্হিবিশ্বে। ভারতে পাচার হওয়া ২জন বাংলাদেশী কিশোরীকে কলকাতা এয়ার পোর্ট থেকে আটক করেছে থানা পুলিশ। সেখান থেকে পালিয়ে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসে
মাসকুরা খাতুন আর তানজিনা খাতুন আপন চাচাতো বোন। হবিগঞ্জ জেলার বানিয়া সুলতানা থানার মারকুলি দৌলতপুর গ্রামে তাদের বাড়ী। পিতা-মাতার অভাবের সংসারে ভাল কাজের সন্ধানে বাড়ী থেকে বের হয় ঢাকায় বাসা বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ জোটে নারানগঞ্জ কালপুরি এলাকার মোশাররফ মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া জেবা খাতুন নামে এক মহিলার বাসায়।
কাজ করতো তারা সেখানে। ভালই দিন পার হচ্ছিল তাদের। বেশ কিছু দিন ধরে ঝি দ্বয়ের প্রতি নজর পড়ে এ বাসার নীচ তলার বাড়াটিয়া আছিয়ার খাতুনের। ওরা জানাতো না আছিয়া খাতুন নারী পাচারকারী। গত মাসের শেষের দিকে নারী পাচারকারী আছিয়া খাতুন, মাসকুরা খাতুন ও তানজিনা খাতুনকে অন্য বাড়ীতে বেশী বেতনে কাজের কথা বলে ঢাকা নারানগঞ্জ জেলার সাইন বোড মুসলিম পাাড়ার ইমতিয়াজের কাছে নিয়ে যায়।
ইমতিয়াজের বাড়ীতে তারা দুদিন ছিল। সেখান থেকে ইমতিয়াজ সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে করে তাদেরকে সাতক্ষীরা নিয়ে আসে। সাতক্ষীরার দুই দালাল মেয়ে কিশোরী দুজনকে গভীর রাতে সীমান্তে পার করে ভারতের দালালের হাতে তুলে দেয়। ভারতীয় দালাল তাদেরকে গায়ঘাটায় নিয়ে যায় এবং আশিক নামে এক নারী পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়।
দুদিন পরে দিল্লি থেকে তাছলিমা খাতুন নামে এক মহিলা আসে দমদম এয়ার পোর্টে (নিষিদ্ধ পল্লির সর্দার)। মেয়ে দুটিকে দিল্লি নেয়ার জন্য বিমানে টিকেটও করা হয়। এয়ার পোর্টে ঢোকার সময় তাদের কাছে থাকা জাল আদার কার্ড দেখে দমদম পুলিশ মাসকুরা খাতুন, তানজিনা খাতুন ও দিল্লি থেকে আসা তাছলিমা খাতুনকে আটক করে। দমদম থানায় তারা ৫ দিন থাকার পর একদিন গভীর রাতে মহিলা পুলিশের সেন্ট্রি ও দিল্লী থেকে আসা দালাল তাছলিমা খাতুন ঘুমিয়ে পড়লে সুযোগ বুঝে কৌশলে মাসকুরা খাতুন ও তানজিনা খাতুন থানা থেকে পালিয়ে আসে ( এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ২৮ জুলাই ভারতের বহুল প্রচারিত দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়)। আশ্রয় নেয় বারাসাতের এক বস্তিতে।
পরে মন্দিরের এক ব্যক্তির সহয়োগীতায় বনগাঁ সীমান্তের এক দালালের হাত ধরে গভীর রাতে তারা তেরঘর সীমান্ত পার হয়ে বেনাপোল এসে পৌঁছায়। বেনাপোল ফিরে এসে তারা এ প্রতিবেদকের কাছে তাদের পাচার হওয়া এবং ভারতের দমদম এয়ার পোর্ট থানা থেকে পালিয়ে আসার লোম হর্ষক কাহিনী বর্ননা করেন। ফিরে কিশোরী দ্বয় বাংলাদেশী নারী পাচারকারী আছিয়া খাতুন ও ইমতিয়াজ হোসেনকে আটক পুর্বক শাস্তির দাবী করেছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ আল-মামুন এক সাক্ষাতকারে বলেন নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে আমরা সীমান্ত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি।পুটখালী সীমান্তে সার্ভিলেন্স ডিভাইস বসানো হয়েছে পাচারকারীদের সন্যাক্ত করনের জন্য। কেউ যাতে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে না যেতে পারে। এজন্য আমরা জনসচেতনতা মুলক অনুষ্ঠানও করে যাচ্ছি ।