পৌরসভার মেয়রের পরিবর্তে আদালতে আত্মসমর্পন করে এখন কারাগারে আছেন যুাবলীগ নেতা
অর্থ আত্মসাতের মামলায় গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রীপুর পৌরসভার মেয়রের পরিবর্তে আদালতে আত্মসমর্পন করে এখন কারাগারে আছেন যুাবলীগ নেতা নুরে আলম। গত রবিবার ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে ঘটনাটি ঘটে।
আদালত সুত্র জানায়, ঘটনার দিন যুবলীগ নেতা নুরে আলম নিজে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান পরিচয়ে পৃথক চার মামলায় আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বিচারক মো. মিজানুর রহমান খান এক মামলায় জামিন দিয়ে বাকি তিন মামলায় জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, শ্রীপুরের মেয়র আনিছুর রহামান কারাগারে। ওই খবর নিয়ে এলাকায় আলোচনা তৈরি হলে জানাজানি হলে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দক্ষিণ এশিয়ার পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দিতে সরকারি সফরে ইন্দোনেশিয়ায় গেছেন মেয়র আনিছুর রহমান। ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফেরার কথা রয়েছে।’ এরই মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার তওফির উদ্দিনের ছেলে নুরে আলম মেয়র সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করে ধরা পরে।
এদিকে জামিন নাকচ করা তিন মামলার মধ্যে একটি মামলার ধার্য তারিখ ছিল সোমবার ওই একই আদালতে। এর ফলে নকল মেয়র নুরে আলমকে নিয়মানুযায়ী কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় রাষ্ট্র পক্ষ থেকে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয় এবং বিচারক আসামির কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইল সত্যতা স্বীকার করেন। পরে নুরে আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নুরে আলম যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন। মেয়র আনিছুর রহমান রহমান বিদেশে যাওয়ার আগে নুরে আলমকে বলে যান, তার পরিবর্তে আদালতে মামলায় কাজ করতে। পরে তিনি ঘটনার দিন সাকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার জজ আদালতে এসে আইনজীবীর কাছে যান। পরে তিনি আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ান। পরে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরআগে সে জেনে শুনেই আনিছুর রহমানের পরিবর্তে আদালতে দাঁড়ায়। পরে কারাগারে প্রবেশের সময়ও আনিছুর রহমান পরিচয় দেয়।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের বিভিন্ন সময়ে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা দেওয়া টাকা পরস্পর যোগসাজসে মেয়র আনিছুর রহমানসহ অন্যরা আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম পৃথক চারটি মামলা করেন। এই মামলা চারটি ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারধীন আছে। এদিকে মিথ্যা পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করার অভিযোগে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, মেয়র আনিছুর রহামান ও নুরে আলমের বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।