গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেবা দিচ্ছেন বিনা বেতনে
ডোনেশন নেয়া হয়েছে এক কোটি একত্রিশ লক্ষ টাকা গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেবা দিচ্ছেন বিনা বেতনে
নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ :
গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক হাসপাতালের কমপক্ষে ৭২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে চাকরী করলেও এখন পর্যন্ত তারা কোন বেতন পাননি। তাদের দেয়া হয়নি কোন নিয়োগপত্র। কিন্তু ৭২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিকট থেকে কমপক্ষে এক থেকে তিন লক্ষ টাকা ডোনেশন নিয়ে তাদের ডায়বেটিক হাসপাতালে কাজ করানো হচ্ছে।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট থেকে নেয়া এক কোটি একত্রিশ লক্ষ টাকা দিয়ে হাসপাতালের যন্ত্রপাতিসহ আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র ক্রয় করে হাসপাতাল চালানো হচ্ছে। কিন্তু যাদের টাকায় হাসপাতাল চলছে তাদের কোন বেতন হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের ৭২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে এ সকল ডোনেশন দিয়ে চাকরী নেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাটাই করে দেয়া হবে।
এ খবর শোনার পর থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বেশীর ভাগই কর্মচারী দরিদ্র অসহায় পরিবারের সদস্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চাকরীর লোভে ধার করে, সুদে এনে ও বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে ডায়বেটিক হাসপাতালের সাধারন সম্পাদক ডা.আবিদ হাসানের কাছে টাকা জমা দিয়ে ডোনেশনের মাধ্যমে চাকরী নিয়ে বিনা বেতনে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় যদি তাদের চাকরী স্থায়ী করন না করে ছাটাই করা হয় তাহলে অধিকাংশ মানুষকে ভিক্ষা করে খেতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালো থাকার জন্য গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক হাসপাতালে চাকরীর আশায় প্রতিষ্ঠানের সাধারন সম্পাদক ডা. আবিদ হাসানের কাছে চাকরীর পদ অনুযায়ী এক থেকে তিন লক্ষ টাকা ডোনেশনের টাকা জমা দিয়েছি।
আমাদের টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি ক্রয় করে প্রতিষ্ঠান চালানো হচ্ছে। অথচ আমাদের কোন বেতন দেয়া হচ্ছে না এবং আমাদের এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। আমরা সরকারে কাছে দাবী জানাচ্ছি যে অবিলম্বে আমাদের চাকরী স্থায়ী করন করে আমাদের বেতন ভাতা দেয়া হোক। অন্যথায় আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক হাসপাতালের সাধারন সম্পাদক ডা. আবিদ হাসান মুঠোফোনে জানান ৭২ জনের কাছ থেকে টাকা ডোনেশন নিয়ে চাকরী দেয়া হয়েছে। ডোনেশনের টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি ও আনুসঙ্গিক মালামাল ক্রয় করে হাসাপতালে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে।
তাদের চাকরী স্থায়ী করন করতে হবে অন্যথায় প্রতিষ্ঠানকে তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। তিনি আরো বলেন সম্প্রতি গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ডায়বেটিক সমিতির সভাপতি একটি এডহক কমিটি করে হাসপাতাল পরিচালনা করছেন।
গোপালগঞ্জ ডায়বেটিক সমিতির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমান সরকার মুঠোফোনে জানান ডোনেশন নিয়ে চাকরী দেয়ার কোন সুযোগ নেই। যারা ডোনেশন নিয়েছেন সে দায় দায়িত্ব তাদের বহন করতে হবে।