গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা দানের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন যিনি i
মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেখানে বর্তমানে সঠিক সেবার তুলোনায় অভিযোগের পাল্লায় ভারি। এ প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভিযোগের শেষ নেই। এখানে প্রতিটি বিভাগে অনীয়মই যেন নীয়মে পরিনত হয়েছে।
এসব অনীয়মের বিষয়ে একাধিকবার পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য কারণে কর্তা ব্যাক্তিরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি বা নেননি বলে জানা যায়। তাই এ প্রতিষ্ঠানে শুধু মাত্র সাধারন কিছু রোগের জন্য পরামর্শ পত্র নেওয়া ছাড়া সেবা গ্রহিতাদের জন্য আর কিছুই মেলে না। এখানে অফিসের নির্দিষ্ট সময়েও অধিকাংশ ডাক্তারদের দেখা মেলেনা। উপস্থিতির সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হলেও সঠিক সময়ে কেউই আসেননা আবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে যান।
এ সকল অনীয়মের মধ্যেও আশার আলো জাগিয়ে রেখেছেন একটি মাত্র মানুষ। প্রায় ৭ বছর আগে তিনি যোগদান করেছেন গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সে থেকেই তিনি দিন রাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা তাকে নিজের লোক বলে মনে করেন। গরীব বা ধনী সেবা দানের বিনিময়ে তিনি কখনও কারোর সাথে আর্থিক ফি নির্ধারন করেননা বা না দিলে কারোর সাথে তিনি দাবিও করেননা।
এ মানুষটি হচ্ছে ডাঃ এম কে রেজা। গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে অধিকাংশ সময়ই অনীয়মের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এ অনীয়মের ভিড়ে সুখের খবর একটি প্রকাশ করাই যায় আর তা হলো একজন ডাঃ এম কে রেজার খবর। সরেজমিনে দেখা গেছে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সময় মতো কেউ না আসলেও ডাঃ এম কে রেজা তার নির্দিষ্ট চেম্বারে রয়েছেন। আগত রোগিরাও টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে ডাঃ এম কে রেজার কাছে রোগ নিরাময়ের পরামর্শ নিতে চান।
এ বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাঃ এম কে রেজা অফিস টাইমের বাইরেও ভাল ভাবে সেবা দিয়ে থাকেন। যে কারণে অধিকাংশ সেবা প্রত্যাশীরা আসেন ডাঃ এম কে রেজার খোঁজে। গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক সময় দেখা গেছে নির্দিষ্ট ডাক্তারের চেম্বারে ডাক্তার থাকেনা।এসব পরিস্থিতি দেখে মেহেরপুর থেকে সিভিল সার্জন নিজে এসে রোগীদের সেবা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটিতে দেখা যায় অন্যান্য চিকিৎসকের উপস্থিতি থাকলেও সেখানে রোগীরা যেতে চাননা। তারা এসে ডাঃ এম কে রেজাকেই বেশি পছন্দ করেন রোগ নিরাময়ের পরামর্শ নেবার জন্য। অফিস টাইমের পরেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিকে কোন চিকিৎসক না থাকলেও ডাঃ এমকে রেজাকে পাওয়া যায়।
সে সময়েও তিনি চিকিৎসা দিতে ক্লান্তি বোধ করেননা। এলাকার অনেক গরীব মানুষের কোন পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে সেটা অনেক সময় তিনি নিজেই ব্যবস্থা করে দেন। এই এলাকার মানুষ ডাঃ এম কে রেজাকে নিজের পরিবারের একজন সদস্য মনে করেন। যে লোকটি অবসরই পাননা, এমনও দেখা গেছে তিনি বাজারে রয়েছেন সে সময়ও অনেক গরীব শ্রেনীর মানুষকেও সেবা দিয়েছেন। এমনকি অনেক সময় তিনি নিজের টাকা দিয়েও অসহায় রোগীদের ওষুধ পত্র কিনে দিয়েছেন।
ডাঃ এম কে রেজার ডিউটি না থাকলেও জরুরী বিভাগে অনেক সময় তাকে রোগীর লোকজন ডাকলে দ্রæত সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। এলাকার লোকজন মনে করেন শুধু মাত্র ডাঃ এম কে রেজা আছেন বলেই তারা গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন সেবা নিতে। তারা আশংকা করেন ডাঃ এম কে রেজা যদি না থাকেন তাহলে এ প্রতিষ্ঠান থেকে সেবার মান একেবারে শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।
এলাকার মানুষ মনে করেন ডাঃ এমকে রেজার মতো যদি সকলে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা দিত তাহলে স্বাস্থ্য সেবাতে বর্তমান সরকারের যে লক্ষ্য সেটা বাস্তবায়ন হতো এবং এলাকার লোক শতভাগ স্বাস্থ্য সেবা পেত। সংশ্লিষ্ট অনেকে স্বীকার করেছেন ডাঃ এমকে রেজার কারণে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান কিছুটা হলেও ধারবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে।
এলাকাবাসির মতে প্রায় ৭ বছর যাবৎ এ এলাকার মানুষকে সেবা প্রদান করে আসছেন ডাঃ এম কে রেজা। ডাক্তার এম কে রেজার মতো আরো ডাক্তার এ প্রতিষ্ঠানটিতে আসুক এমনটিও এলাকাবাসির দাবি। যিনি শুধু একজনই চিকিৎসকই নন, একজন সৎ ও ভাল মনের মানুষ।