কাশিয়ানীতে পূজা মন্ডপে টাকার বিনিময়ে অদক্ষ আনসার নিয়োগ; লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য ‘দেখার কেউ নেই’
কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
গোপালগঞ্জের কাশিয়ান উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ১১৮৮ জন আনসার নিয়োগ করা হয়েছে। যার মধ্যে ট্রেনিং প্রাপ্ত ও নন ট্রেনিং প্রাপ্ত রয়েছে। এক একজন আনসারের কাছ থেকে ৫শ থেকে ৭শ পর্যন্ত টাকা নিয়ে অস্থায়ী এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গড়ে ৬ শ টাকা করে নিলে প্রায় ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নিয়েছে শুধু নিয়োগ বানিজ্যে ভুক্তভুগিদের অভিযোগ । অভিযুক্তরা হলো ফজলু, অশা লতা ও সঞ্জয়।
সংশিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ১১৮৮ জন আনসার নিয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে এ বছর যারা পিসির দায়িত্বে আছে ২ হাজার ৬২৫ টাকা এবং যারা কর্মী হিসেবে আছে তারা পাবে ২ হাজার ৩৭৫ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন আনসার সদস্য বলেন, পূজা মন্ডপে ডিউটি করার জন্য আমাদের কাছ থেকে ৫শ থেকে ৭শ পর্যন্ত টাকা নিয়েছে ইউনিয়ন কমান্ডার ফজলু। টাকা না দিলে আমাদের ডিউটিতে আনবে না তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিয়েছি। এর আগের বছরও ঠিক এই ভাবেই ফজলুকে টাকা দেয়ার কথা বলেছেন আনসার সদস্যরা। এবং তারা বলেন টি আই আশা লতা ম্যাডাম ও টি আই সঞ্জয় কুমার স্যার আমার মাধ্যমে টাকার বিনিময় নিয়োগ দিবে বলে আমাদের জানায় ফজলু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পূজা মন্ডপের পরিচালক বলেন, মন্ডপে খুবই বয়স্ক পুরুষ ও মহিলা আনসার পাঠানো হয়েছে। যাদের একদম প্রশিক্ষণ নেই। তারা শৃঙ্খলার কিছুই বোঝে না। আমাদের মন্ডপের লোকজনই তাদের পাহারা দিয়ে রাখে।
কাশিয়ানী সদর ইউনিয়ন কমান্ডার ফজলুর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে অদক্ষ আনসার নিয়োগের সহায়তায় অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি রেগে বলেন, আনসার নিয়োগে আমি কোনো টাকাই নেই নি। আর যদি টাকা নিয়েও থাকি কশিয়ানী ও গোপালগঞ্জ অফিসারদের ভাগ দেই যা পারেন আপনারা তাই করেন। টি.আই আশালতা ও টি.আই সঞ্জয় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট ফেরদাউস অহম্মেদ বলেন আমি সঠিক তথ্য প্রমান পেলে এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিব ।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, পূজা মন্ডপের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় যে আনসার সদস্যরা রয়েছে তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকা নেওয়াটা এবং পরিপূর্ন ড্রেস ছাড়া ডিউটি করার বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি নিয়ে সময় মত মিটিংয়ে কথা বলবো।
আনসার নিয়োগের বিষয়ে উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এস,এম মাঈন উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রেনিং ছাড়া কি কাজ করবে। তারাতো নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবে না। অন্যদের রক্ষা করবে কিভাবে। গরীব মানুষ তাদের কাছ থেকে কেন টাকা নিবে।
মিটিংয়ে আমরা বলেছি একদম অল্পবয়স্ক বা বেশি বয়স্ক লোক নিয়োগ করা যাবে না। মধ্য বয়স্ক লোক দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সামনে নির্বাচন সেখানেও তো আনসার লাগবে। আমরা বিষয়গুলো দেখছি। এটা খুবই দুঃখজনক।