ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট বন্ধের পর পার হয়েছে এক যুগেরও বেশি।
ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট বন্ধের পর পার হয়েছে এক যুগেরও বেশি। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন- এফএএ'র শর্ত মতো নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। অথচ এখনো ক্যাটাগরি ওয়ানে উন্নীত হতে পারেনি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক। ফলে ড্রিমলাইনারের মতো উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত হলেও এই রুটে ফ্লাইট চালু করতে পারছে না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে প্রথম শ্রেণীর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় উত্তরণে এফএএ'র নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়তো বাংলাদেশের বিমান। লোকসানের মুখে ২০০৬ সালে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। পরে আবার ফ্লাইট চালুর চেষ্টা করে জাতীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনকে দ্বিতীয় ক্যাটাগরির নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে চিহ্নিত করলে রুদ্ধ হয়ে যায় সে পথ। ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা দুর্বলতার কারণ দেখিয়ে ক্যাটাগরি ওয়ানে উন্নীত হতে দেয়া হয় কয়েকটি শর্ত। বেবিচকের দাবি শর্ত পূরণে এরই মধ্যে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। তাই গেল ফেব্রুয়ারিতে এফএএ'র প্রথম পরিদর্শনে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।
বেবিচক'র ফ্লাইট সেফটি এন্ড রেগুলেশনের পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী জিয়াউল কবির বলেন, 'এ্যাভায়েশনের জন্য আমাদের একটি শক্ত আইন দরকার ছিল। সেটা আমরা পেয়ে গেছি। তাছাড়া আমরা অর্গামেনের কাজটাও শেষ পর্যায়ে। ওরা সন্তুষ্ট। ফেব্রুয়ারি মাসে তারা অডিটে আসবে। তারা একটি কমিন্ডেশন সার্টিফিকেট দিয়ে বাংলাদেশকে।'
বিমান পরিচালনা, উড্ডয়ন সক্ষমতা, লাইসেন্সিংসহ আকাশ পথে নিরাপত্তার বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি হলেও চূড়ান্ত নিরীক্ষণে সফল হতে আরো উন্নতির দরকার হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নিরীক্ষা মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি আছে বলে জানায় বেবিচক।
সিভিল এভিয়েশনের সাবেক পরিচালক আজাদ জহিরুল ইসলাম বলেন, 'নিরাপত্তা, সিভিয়ালিশন সেফটি, লাইসেন্সসিং সার্টিফিকেশন, অথরাইজেশন আপ্রুভাল ঠিক মতো আছে কিনা সেগুলো দেখবে।'
বেবিচক'র ফ্লাইট সেফটি এন্ড রেগুলেশনের পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী জিয়াউল কবির বলেন, 'সবগুলো প্রক্রিয়ায় ভালো ভাবে শেষ হয়েছে। এখন দ্বীতিয় অডিটটা ভালো ভাবে হলেই আমরা আশা করতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমরা পাবে।'
এদিকে সব প্রস্তুতি থাকলেও ক্যাটাগরি ওয়ান না পাওয়া পর্যন্ত নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে ফ্লাইট চালু করতে পারছে না বাংলাদেশ বিমান।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, 'আমরা নিউইয়ার্কে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আমরা উড়োজাহাজের দিক দিয়ে প্রস্তুত আছি। আমাদের মার্কেট সেখানে রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই ফ্লাইটটি পরিচালনা করতে পারছি না। কারণ বাংলাদেশ সিভিলিয়েশন অথরিটি ক্যাটাগরি টু থাকার কারণে সেখানে আমাদের ফ্লাইট পরিচালনা করার কোন অনুমতি নেই। টরেন্টতেও যেতে পারছি না কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হবে।'
বিমান নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট চালু করলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীরা তুলনামূলক কম সময়ে নিউইয়র্ক যেতে পারবে। ড্রিমলাইনারের মতো জ্বালানি সাশ্রয়ী উড়োজাহাজ থাকায় লোকসানও হবে না বলে মনে করে সংস্থাটি।