মুন্নীর সাজার বিষয়ে আপিল শুনানি শেষ, আদেশ দুপুরে
যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নীর দণ্ড স্থগিত করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার মুন্নীকে বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, ‘যেহেতু এর আগে আমরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছি, এটা আমরা আগামীকাল (রোববার) পর্যন্ত স্থগিত করে ফুল কোর্টে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও এবিএম বায়েজিদ।
মুন্নীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুবউদ্দিন খোকন।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এ আদেশের ফলে মুন্নীর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ আর থাকল না, যদি না রোববার আপিল বিভাগ ভিন্নতর কোনো আদেশ দেন।
তিনি বলেন, আপিল বিভাগ আদেশ না দেয়া পর্যন্ত চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল থাকবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু মুন্নীর ক্ষেত্রে নয়, এটা সংবিধানের বিধান। দু’বছরের বেশি দণ্ডিত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় চলতি বছর ১২ জুলাই মুন্নীকে দুটি ধারায় তিন বছর করে ছয় বছরের সাজা দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর মুন্নী ওই দণ্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন করলে বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তা মঞ্জুর করেন।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কারও দণ্ড চূড়ান্ত বলা যাবে না।’
আদালত থেকে বেরিয়ে মুন্নীর আইনজীবী জানান, এর ফলে তার নির্বাচন করতে আর কোনো বাধা নেই। অথচ দু’দিন আগে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বলেছিলেন, দু’বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে আপিল করেও কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির পাঁচ নেতার দণ্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার ওই পর্যবেক্ষণ দেন।
হাইকোর্টের দুই বেঞ্চ থেকে একই ধরনের মামলায় ভিন্ন আদেশ আসায় নতুন জটিলতা তৈরি হয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে অন্য যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে কী ঘটবে- সেই প্রশ্ন ওঠে।
এরপর মুন্নীর মামলায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক। শুনানি শেষে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।