১৪ ডিসেম্বর মোরেলগঞ্জ মুক্ত দিবস
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট :
১৪ ডিসেম্বর মোরেলগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা। দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা। মোরেলগঞ্জ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ডা. মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল মোরেলগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করেন।
ডা. মোসলেম উদ্দিন জানান, দলটি ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মংলা থেকে মোরেলগঞ্জে আসে। প্রথমে তারা টাউন স্কুল মাঠে অবস্থান নিয়ে ভোর ৪টার দিকে গুলি ছোড়ে। এ সময় মোরেলগঞ্জের ৬টি রাজাকার ক্যাম্পে থাকা শতাধিক রাজাকার নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। সকাল ৭টার দিকে রাজাকারদের অন্যতম ঘাটি রায়দের বিল্ডিংয়ে অবস্থান নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডা. মোসলেম উদ্দিন। সকাল ১০টায় পথসভা করে সকলকে স্ব স্ব কর্মে যোগদান ও স্বাভাবিক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় তার সাথে ছিলেন নীল রতন মিস্ত্রী, এম কে আজিজ, কচুবুনিয়ার সুলতান আহমেদ, চিংড়াখালীর আ. রশিদ বক্স, শরণখোলার খায়রুল আলম, অমূল্য কুমার রায়, ভাটখালীর আব্দুল খালেক, কাকড়াতলীর চিরানন্দ মন্ডল, জিউধরার আব্দুর রাজ্জাক ও রাজেন মন্ডল।
এদিকে মোরেলগঞ্জ মুক্ত দিবস সম্পর্কে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. লিয়াকত আলী খান বলেন, ১১ জন নয় ৭ জনের একটি দল মুজিব বাহিনীর মন্ত্র নিয়ে মোরেলগঞ্জে এসেছিল। কিন্তু মোরেলগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করার বিষয়ে তাদের কোনই অবদান ছিল না। বরং উদ্ভট আচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ওই ৭ জনকে ১৫ দিন রায়দের বিল্ডিংয়ে আটক করে রাখা হয়েছিল।
মুজিববাহিনীর কমান্ডার ডা. মোসলেম উদ্দিন জানান, ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মুক্তিযোদ্ধারা মোরেলগঞ্জের তিনটি রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মুক্তিকামী জনতা ফুঁসে উঠলে রাজাকার ও পাকি বাহিনীর সদস্যরা জীবন বাঁচাতে নৌকায় পানগুছি নদী দিয়ে পালিয়ে যায়। হানাদার মুক্ত
হয় মোরেলগঞ্জ।
১৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় মুক্তিকামী জনতাকে সঙ্গে নিয়ে মুজিববাহিনীর সদস্যরা মোরেলগঞ্জ উপজেলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলেন।