নড়াইল-২ আসন চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাশরাফি বিন মুর্তজা।
মাশরাফি বলেন, তারুণ্যই অগ্রগতির মূল শক্তি। নির্বাচিত হলে তরুণ প্রবীণ সবাইকে নিয়েই গড়তে চান সমৃদ্ধ নড়াইল।
‘দেখেন, নড়াইল, ভৌগোলিক কারণেই আমরা এমন একটা অবস্থানে আছি যেখানে অনেক বিষয় আছে। প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনোকিছুই বলতে চাই না। তবে, আমার ইচ্ছা আছে মানুষের জন্য কাজ করার। আর সেই সুযোগটা যদি পাই তারপরে দেখা যাবে।’ বলছিলেন মাশরাফি।
মাশরাফি বলেন, রাজনীতির প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবেন না। আবার রাজনীতির নামে হানাহানি-সহিংসতারও বিপক্ষে দেশের এ ওয়ানডে অধিনায়ক।
‘ভালো কাজ দেখতে চাই। ভালো কিছু করতে পারলে সেখান থেকে যদি ভালো কিছু উঠে আসে, আমার বিশ্বাস সেটা শুধু নড়াইল না সারা বাংলাদেশে তার একটা ইফেক্ট পড়বে। ভালো কাজের পুরস্কার সব সময় ভালোই হয়।’
খেলার মাঠের মতো ভোটের মাঠেও বিজয়ী হয়ে রাজনৈতিক সম্প্রীতির সংস্কৃতি নড়াইল থেকেই শুরু করতে চান তিনি।
আমি এমনিতেই প্রতিহিংসা পছন্দ করি না। আমার প্রতিপক্ষ যারা আছেন তাদের দুর্বল ভাবাও অন্যায়। আমি চাচ্ছি যেনো তাদের ইনশিউর করতে পারি, তাদের কোন ডিস্টার্ব না হয়। তারা যেনো তাদের মতো প্রচারণা চালাতে পারে।’
মাশরাফি বলেন, সমাজের উন্নয়ন করা যায় যেকোনো অবস্থান থেকেই। তবে, রাজনীতি করলে এ সুযোগ বেশি পাওয়া যায়। তাই ভোটের মাঠে নেমেছেন তিনি।
রাস্তার প্রতিটি মোড়ে নারী, পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা পেসার। এমনকি যেখানে থামার কথা নয়, সেখানেও থেমে জনতার সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি। শিশু থেকে বৃদ্ধ বহু মানুষ তার জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছে। এত মানুষের ভালোবাসা তো অবজ্ঞা করা সম্ভব নয়!
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) লোহাগড়ার সত্রহাজারী হাইস্কুল মাঠের পথসভায় তো রীতিমতো ‘জামাই আদর’ পেলেন মাশরাফি। এটা তার শ্বশুর বাড়ির এলাকা। সেখানে মাশরাফি নন, ভোট চান তার স্ত্রী সুমনা হক সুমি। শুরুতে গান গেয়ে ‘জামাই’ মাশরাফিকে স্বাগত জানান স্থানীয় এক বাউল শিল্পী। এরপর সঞ্চালক ঘোষণা করেন, ‘এখন কোনও স্লোগান হবে না। সবাই নিজের মতো ছবি তোলেন, সেলফি তোলেন। আমাদের জামাই এসেছে।’ সঞ্চালকের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মাশরাফিকে ঘিরে ধরে ছবি তুলতে শুরু করে জনতা।
পথসভায় মাশরাফির স্ত্রী সুমি বলেন, ‘আমার এভাবে আসতে হবে ভাবিনি, তবুও এসেছি। আমি এই গ্রামেরই মেয়ে আর মাশরাফি আপনাদেরই জামাই। মাশরাফির জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে এসেছি। কিন্তু এভাবে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হবে আমি এটা চিন্তা করি না। কারণ জামাইকে জেতানোর দায়িত্ব আপনাদেরই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আর নতুন করে কী বলবো? মাশরাফিকে তো আপনারা সবাই চিনেন। আগে যে জায়গাটায় ছিল সেখানে সে এখনকার চেয়ে অনেক ভালো ছিল। আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো ছিল। তবুও আপনাদের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নতুন বছরের আর কয়েকদিন আছে। আমি আশা করবো, ২০১৯ সালের প্রথম যে সূর্যটা উঠবে সেটা হবে নড়াইলের উন্নয়নের সূর্য। আর যেনো অবহেলিত নড়াইল শুনতে না হয়, উন্নয়নের নড়াইল যেন শোনা যায় এই চেষ্টাই থাকবে তার। আপনারা তাকে সেই সুযোগটা করে দিবেন।’
মাশরাফি মানেই মানুষের ঢল। মাশরাফি মানেই মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গত তিন দিন ধরে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সব জায়গায় একই চিত্র। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে বিজয়ী হতে পারলে মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চান তিনি।