বুদ্ধি ও কর্মদক্ষতা বলে মাছ চাষে ঝিনাইদহের লাভলী ইয়াসমিনের ভাগ্য বদল
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহ
নারী হয়ে ঘরে বসে থাকেননি লাভলী ইয়াসমিন। নিজের বুদ্ধি আর কর্মদক্ষতা দিয়ে মাছ চাষ করে নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে সংসারের আর্থিক সচ্চলতা ফিরিয়েছেন তিনি। তার এই ভাগ্য বদলের গল্প মোটেও সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রম তাকে একজন পরিশ্রমী মা ও সংসারী মেয়ে হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি হলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের নারী উদ্যোক্তা লাভলী ইয়াসমিন। ২০০১ সালে গ্রামের একটি পুকুর লিজ নিয়ে শুরু করেন রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারকার্প মাছের চাষ। প্রথম বছরেই সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেন তিনি। পরের বছর গ্রামের আরও দুটি পুকুর নিয়ে পূর্ণ উদ্যোমে শুরু করেন মাছচাষ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। বর্তমানে আট একর জমিতে তিনি রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারকার্প, গ্লাসকার্প, সাদাপুটি, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছচাষ করছেন। বর্তমানে তিনি স্বাবলম্বী।
পাশাপাশি তার মৎস্য খামারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে ২০ জন বেকার নারী-পুরুষের। তিন সন্তানের জননী লাভলী ইয়াসমিনের স্বামী ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বেকার অবস্থায় ছিলেন। ওই সময় তিন সন্তানের লেখাপড়া করেয়িছেন মৎস্য চাষ থেকে আয়কৃত অর্থ দিয়ে। বর্তমানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান তানজীব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, দ্বিতীয় ছেলে রাকিবুজ্জামান তানভীর বিএসসি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ও ছোট ছেলে হাসিবুজ্জামান রাহাত ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কমার্স কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। মাছ চাষে সফল এই নারী উদ্যোক্তা ২০১২ সালের ১৩ জুন কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
১৬ বছরের সংগ্রামী জিবনে লাভলী ইয়াসমিন বর্তমানে মাগুরা ও ঝিনাইদহ শহরের দুটি জমির মালিক। গ্রামে করেছেন পাকা ঘর। এছাড়াও কৃষিতে অবদান রাখায় ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পেছেন লাভলী ইয়াসমিন। তার এই সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন মৎস্য চাষে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার বলেন, সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে লাভলী ইয়াসমিনকে সকল প্রকার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক মানুষ মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।