শ্রীলঙ্কা হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। আটক করা হয়েছে সন্দেহভাজন ২৪ জনকে।
রোববার (২১ এপ্রিল) জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সন্ত্রাস নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এদিকে কলম্বো বিমানবন্দরের কাছ একটি পাইপ বোমা উদ্ধার করেছে দেশটির বিমান বাহিনী।
শ্রীলঙ্কার গির্জা ও হোটেলে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতের খোঁজে চিরুনি অভিযান অব্যাহত রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি রয়েছে নৈশকালীন জরুরি অবস্থা।
এর মধ্যে রোববারের হামলায় নিহতদের মরদেহ শনাক্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
লঙ্কান পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রুয়ান গুনেসেকার বলেন, ২০৭ টি মরদেহ পোস্টমর্টেমের কাজ শুরু হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো দ্বীপে জরুরি অবস্থা অব্যাহত আছে।
রোববারের হামলার শিকার একটি গির্জা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। এসময় তিনি বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অল্প সময়ে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। পরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, সতর্ক করার পরও কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। সর্বপ্রথম সন্ত্রাসমুক্ত শ্রীলঙ্কা নিশ্চিত করবো আমরা। কোনোভাবেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সহ্য করা হবে। সন্ত্রাস নির্মূলে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই। বর্বর এ হামলায় যারা স্বজন হারিয়েছেন, আমিও তাদের মতো সমব্যথিত।
হামলার জন্য ধর্মীয় চরমপন্থিদের দায়ী করেছেন লঙ্কান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রোববারের হামলার অধিকাংশই আত্মঘাতী বলে'ও জানান তিনি। গৃহযুদ্ধ অবসানের ১০ বছর পর এ ধরনের হামলায় আবারও শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, বিকট শব্দ হল। শুধু দেখার জন্য ছাদে গেলাম। মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে, ধোয়া দেখতে পেলাম। সাদা ধোয়া এদিকে এগিয়ে আসছে। একই মুহূর্তে দেখলাম একটি হেলিকপ্টার চক্কর দিচ্ছে।
এক লঙ্কান নাগরিক বলেন, এ ধরনের হামলায় আমরা স্তম্ভিত। গেল ১০ বছর ধরে আমরা শান্তিতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলাম। হঠাৎ করে এ ধরনের ঘটনা আবারও গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে আমাদের।
এদিকে টিকেট নিশ্চিত করা যাত্রীরা জরুরি অবস্থার মধ্যেও দেশ ত্যাগ করতে পারবে বলে জানিয়েছে লঙ্কান বিমান কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তল্লাশি চৌকিতে যাত্রীদের পাসপোর্ট ও টিকেট দেখাতে হবে।