প্রখর গরমে জয়পুরহাটে হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া দিনদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
নিরেন দাস,(চ্যানেল ফোর)জয়পুরহাট, রিপোর্টার।
প্রখর গরমে তীব্র তাপমাত্রার ফলে জয়পুরহাটে হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। যার ফলে দিনদিন বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের এমনকি প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী।
গত আট দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ৩ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছে। এর মধ্যে অনেক রোগীরা চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে। কেউ কেউ চিকিৎসা নিচ্ছে।
চিকিৎসকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, হঠাৎ অস্বাভাবিক গরম ও রোদের তীব্র তাপের কারণেই এ ডায়রিয়ার দিনদিন প্রকোপ বাড়ছে।
জেলার আরও পাঁচটি উপজেলায় হাসপাতাল থাকলেও শুধু মাত্র জেলা সদর হাসপাতালেই প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসছেন ৫০ থেকে ৭০ জন রোগী। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অসংখ্য রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক রোগী রয়েছে।
জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে অনেক রোগীদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে জায়গা নিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতেও হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত আট দিন থেকে জেলা জুড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৭০ জন রোগীরা আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু রোগীদের সংখ্যাই বেশি। আটদিনের মধ্যে তিন দিনই আধুনিক জেলা হাসপাতালে প্রায় ২০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। বৈরি আবহাওয়া ও প্রখর রোদ, ধুলোবালির পাশাপাশি অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এর প্রকোপ আরও দিনদিন বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তির পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ছেন বলেও জানা যায়।
গত এক সপ্তাহ পাড়ি দিয়ে আট দিনের মাথায় রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত প্রায় ৩ শতাধিক রোগীকে হাসপাতালের বেডে, মেঝেতে ও বারান্দ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব রোগীরা প্রচণ্ড জ্বর, শরীর ব্যথা এবং শিশুরা সাধারণত বমি, পাতলা পায়খানা ও পেটের ব্যথায় ভুগছিল, পরে অবস্থা সংকটাপূর্ণ ভেবে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালেন চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শহরের শাপলা নগর মহল্লার দুই বছরের শিশু সানজিদা, আক্কেলপুর উপজেলার মাতাপুর গ্রামের সাদিয়ার অভিভাবক জানান, তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচ দিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের এলাকার অনেক শিশুরাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
অন্য দিকে সদরের জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভিটি এলাকার শিল্পী বেগম বলেন, তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত ৭ দিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা বলেন, ইদানিং অনেক মানুষেরই এ অসুখ হচ্ছে। কেউ হাসপাতালে আসে, আবার অনেকেই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ জ্বর পরে অনেক দিন যাবত ভোগাতে হচ্ছে।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ- মোঃ আবুল হোসেন জানান,দিনদিন অস্বাভাবিক গরম ও প্রখর রোদের সাথে ধুলাবালির কারণে ডায়রিয়া রোগ বেড়েই চলেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। গত এক সপ্তাহের মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ৩ শত নারী, পুরুষ ও শিশু কে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে। প্রচণ্ড তাপদাহ আর বিশুদ্ধ পানি সংকটের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে এমন দাবি চিকিৎসকদের। বিশুদ্ধ খাদ্য ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ডায়রিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জয়পুরহাট জেলা বাসীর।