গাইবান্ধার হাটে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক দামেও ধান বেচতে না পেরে হতাশ করছেন কৃষক।
গাইবান্ধার হাটে ধান কিনতে ফড়িয়া বা ব্যবসায়ীরা তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। খাদ্য বিভাগও নড়াচড়া করছে না। এ অবস্থায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক দামেও হাটে ধান বেচতে না পেরে হাপিত্যেশ করছেন কৃষক। অগ্রিম ঘোষণার পরও খাদ্য বিভাগের নীরবতায় মধ্যস্বত্বভোগীরা অবিশ্বাস্য দামে ধান কিনে গুদামজাত করছে।
সন্তান আর পরিবার পরিজনের সুখের জন্য সব কষ্ট মেনে নিয়ে ফসল উৎপাদন করেও দাম না পেয়ে হতাশ হাটে আসা কৃষকরা। প্রখর রোদ মাথায় নিয়ে হাড়ভাঙ্গা খাটুনির ফসল ধান বেচতে ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ব্যাপারীদের তেমন দেখা মেলেনি। সরকার নির্ধারিত দামের অর্ধেকও জুটছে না তাদের
কৃষকরা বলেন, কেউ এসে ধানের দাম করে যায়, পরে এসে আরো কম বলে। সরকার যে দাম ধরে দিয়েছে সেটার অর্ধেকও তো আমরা পাচ্ছি না, ধান আবাদ করে তাহলে আমাদের লাভটা কি? এভাবে তো পেট চলবে না, তাহলে আবাদ করা বাদ দিতে হবে।
গাইবান্ধা জেলায় এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। তারমধ্যে সরকার মাত্র ৩ হাজার ৯শ মেট্রিক টন ধান কেনার ঘোষণা দিলেও হাত পা গুটিয়ে বসে আছে কৃষি ও খাদ্য বিভাগ। এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতেও নারাজ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা। আর কৃষকের তালিকা করতে না পারার জন্য নানা অজুহাত কৃষি বিভাগের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ এম এম ফেরদৌস বলেন, এক দুই দিনের মধ্যে আমরা তালিকাটা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারবো। গাইবান্ধাতে বোরো ধানের আবাদ বিলম্বে হয়। কর্তন প্রক্রিয়া চলছে, এ কারণে ধান বা গম সংগ্রহ একটু বিলম্ব হচ্ছে।
কৃষক নেতারা সরকার উদ্যোগ নিলে এখনো কৃষককে বাঁচানো সম্ভব। সমাজতান্ত্রিক খেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হাবীব সাঈদ বলেন, সরকার নির্দেশিত রেটে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনতে হবে, এই ধান খাদ্য গুদামে রেখে চালে রূপান্তর করে সেই চালটাই যদি ১০ টাকায়, ওএমএসের মাধ্যমে হাটে বাজারে বিক্রি করতে যায়, যারা কিনে খায় তারাও কম দামে পেল, চাষিরাও তার ন্যায্যমূল্য পেল।
জেলায় এবার বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে দান আবাদ হয়েছে।