কর্মসংস্থান এবং বিদেশে পাড়ি দিতে পাসপোর্ট করার জন্য ক্যাম্পগুলো থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা সিলেটে
কর্মসংস্থান এবং বিদেশে পাড়ি দিতে পাসপোর্ট করার জন্য চট্টগ্রামের ক্যাম্পগুলো থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা সিলেটে অনুপ্রবেশ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে কিছু রোহিঙ্গা ধরাও পড়েছে। আবার কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারাও গেছে।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ মে মারা যান ৪০-৪৫ বছরের এক নারী। অজ্ঞাত হিসেবে কে বা কারা হাসপাতালে এনে রেখে গিয়েছিল তাকে। মৃত্যুর পর তার কোনো স্বজনকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশে খবর দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অজ্ঞাত হিসেবেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে। এর আগে পরিচয় শনাক্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে ওই নারীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট ‘নট ফাউন্ড’ দেখায়। সার্ভারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না থাকা ও চেহারায় মিল থাকায় পিবিআই কর্মকর্তাদের ধারণা ওই নারী রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিলেন। সিলেটের কোথাও আশ্রয় নিয়ে তিনি বসবাস করছিলেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে কেউ হাসপাতালে ফেলে গিয়েছিল।
শুধু ওই নারী নন, গত ২৯ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০-৩৫ বছরের আরেক যুবক মারা যান ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাকেও কে বা কারা রেখে গিয়েছিল হাসপাতালে।
মৃত্যুর পর তার কোনো স্বজনকে খুঁজে পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। তদন্ত করে পিবিআইও পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি ওই যুবকের। হাসপাতালে মারা যাওয়া অজ্ঞাত ওই যুবকের চেহারার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মিল ছিল বলে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।
পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘কোথাও অজ্ঞাত লাশ পাওয়া গেলে আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করি।
ওসমানীতে উদ্ধারকৃত দুটি লাশ শনাক্তের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু সার্ভারে সেগুলো ‘নট ফাউন্ড’ দেখায়। যারা ইনভেস্টিগেশনে গিয়েছিল তারা মৃতদেহের শারীরিক গঠন দেখে তাদের রোহিঙ্গা হিসেবে ধারণা করেছে।
’ শুধু হাসপাতালে নয়, বিভিন্ন সময় সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে রোহিঙ্গা নাগরিক আটক করে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। গত কয়েক মাসে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৫০ রোহিঙ্গাকে আটক করে কুতুপালং পাঠানো হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সতর্কতা জারির পরও সিলেটে অনুপ্রবেশের বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনও। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কাজের সন্ধান ও বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে দালালের মাধ্যমেই রোহিঙ্গারা সিলেটে আসেন।
ভুয়া তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টাকালে এরই মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে কয়েকজন রোহিঙ্গা নাগরিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন।