অবশেষে বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে লিজ নেয়া নষ্ট দুটি উড়োজাহাজ ফেরত দেয়া হচ্ছে।
এ মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সমঝোতা হবে বলে সময় সংবাদকে জানিয়েছেন বেসমারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব। ফেরত দিতে না পারলেও অচল দুটি উড়োজাহাজের পেছনে গেল এক বছরে বিমানের লোকসান হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। বিমানের সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের ব্যয়বহুল লিজ চুক্তি করে মধ্যসত্বভোগী কমিশনভোগীরা বিমানকে ডুবালেও শাস্তি হয়নি কারো।
২০১৪ সালে মিশরীয় বিমান সংস্থা ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ট্রিপল সেভেন ই.আর টু জিরো জিরো মডেলের দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ৫ বছর মেয়াদী ওই চুক্তির শর্ত ছিল, যেভাবে উড়োজাহাজ নেয়া হয়েছে ফেরত দিতে হবে সে অবস্থায়। কিন্তু ইঞ্জিন সমস্যাসহ নানা কারিগরি জটিলতায় আয় তো দূরের কথা, এক বছরের বেশি সময় দুটিই বিকল হয়ে পড়ে আছে ভিয়েতনাম বিমানবন্দরে। উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ না পাওয়ায় মেরামত করে ফেরত দেয়া সম্ভব না হলেও চুক্তি মোতাবেক প্রতিমাসে ঠিকই ১০ কোটি টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে বিমানকে।
দীর্ঘ সময়ে ইজিপ্ট এয়ারের সঙ্গে দেনদরবারে কোন সুরাহা করতে না পারায় সবশেষে যুক্ত করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মিশরে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে। ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে অবশেষে সমঝোতার পথে বিমান।
বিমান সচিব মহিবুল হক বলেন, আমরা ইজিপ্টিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছি, তোমাদের বিমান যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় ফেরত নিয়ে যাবে। আমাদের কাছে কত টাকা চাও সেটা ডিমান্ড কর। তারা একটি বড় টাকার ডিমান্ড দিয়েছে যা অসম্ভব। এখন তারা আরেকটি প্রস্তাব দিয়েছে, সেটার জন্য আমাদের কয়েকজন মিশরে যাবে।'
বিমানের সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, স্বার্থবিরোধী উড়োজাহাজ লিজ বাণিজ্যের কারণে বিমানকে অনেক বড় খেসারত দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিমান সাবেক পরিচালক নাফীয ইমতিয়াযউদ্দীন বলেন, বিমানের এই অভিজ্ঞতা কিন্তু নতুন না। এর আগেও অনেক খরচ হয়েছে। আমি মনে করি যথাযথ তদন্ত হলে বারে বারে এরকম খরচ হত না।
পাইলট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সাবেক সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. হেলাল বলেন, যারা মাঝে মিডিয়া আছে, যাদের দ্বারা লিজ নেয়া হয়েছে তারা তো মিলিয়ন ডলার লাভ পাচ্ছে।
দফায় দফায় মেরামত ও অচল বসে থাকার কারণে দুটি উড়োজাহাজের পেছনে এরই মধ্যে বিমানের লোকসান হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকা।