মানুষের খাদ্য তালিকার প্রাণীর এসব খাবার এ যেন মানুষ মারার কারখানা
গরু ছাগলের পচে যাওয়া চামড়া, ট্যানারির উচ্ছিষ্ট আর কসাইখানার বস্তাপচা হাড়ে- কেমিকেল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন প্রোটিনের উৎস পোলট্রি মুরগি ও মাছের খাবার। অবৈধভাবে নগরীতে গড়ে ওঠা এমন ৬টি কারখানায় অভিযান চালিয়েছে র্যাব। ২ হাজার ৮০০ টন বিষাক্ত এসব ফিড জব্দ করে ৩ মালিকসহ অন্তত ১০ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মানুষের খাদ্য তালিকার প্রাণীরা এসব খাবার গ্রহণ করায় যকৃৎ, কিডনি বিকলসহ ক্যান্সারের মত রোগ হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ যেন মানুষ মারার কারখানা। নাক চেপে বস্তাপচা হাড়, চামড়ার স্যাঁতস্যাঁতে পথ পেরোলে দম বন্ধ হবার উপক্রম। পোকায় ধরা বস্তা বস্তা ট্যানারি বর্জ্য এখানে প্রধান কাঁচামাল। তা দিয়েই তৈরি হচ্ছে খাদ্য তালিকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পোলট্রি মুরগি, গরু ও মাছের খাবার।
সারি সারি রাসায়নিকের ড্রাম, এসিড, মিথানল, পচে যাওয়া চামড়া গলানোর চৌবাচ্চা ঝুঁকিপূর্ণ সব উপাদানই জড়ো করেছে একটি চক্র। নজরদারির নানা ঘোষণার মধ্যেও বছরের পর বছর ধরে চলছে এসব কারখানা। দিনে পরিত্যক্ত মনে হলেও রাতের আধারে সক্রিয় হয়ে ওঠে দুষ্কৃতিকারী চক্র।
আটক মালিক সেলিম বলেন, মাঝখানে তিনমাস বন্ধ রেখেছিলাম। পরে কিছু মাল ছিল তাই চালু করেছি।
গোয়েন্দা নজরদারির পর হাজারীবাগের এমন ৬টি কারাখানায় অভিযান চালায় র্যাব। দুই হাজার ৮০০ টন বিষাক্ত এ ফিডসহ আটক করে ৩ কারখানা মালিকসহ অন্তত ১০ জনকে। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বলছে, এর নেপথ্যে যে ট্যানারিগুলো তা অনেকটাই স্পষ্ট।
র্যাব ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, আইন অনুযায়ী কোনভাবেই ট্যানারির এই বর্জ্য এর বাইরে আসা কথা না। এই মালিকরা এসব করছে।
প্রাণিবিজ্ঞনীরা বলছেন, কিডনি, লিভার সংক্রমণসহ ক্যান্সার রোগের কারণ বিষাক্ত এ ফিডগুলো।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, 'এগুলো হাই প্রোটিন, এতে মাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে। অনেক মোটাতাজাকরণ করেন। কিন্তু এর মাধ্যমে যে হেবি মেটাল আমাদের শরীরে যাচ্ছে তাতে কিডনি, লিভার সংক্রমণসহ ক্যান্সার, ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে।'
র্যাব জানিয়েছে, মুরগি ও মাছের খাবার আমদানীকারক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান জড়িত এই প্রতারণায়। যে কোন মূল্যে এ চক্রকে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে র্যাব।