রওশন এরশাদের বাসায় গিয়ে তার দোয়া নিলে এলেন জি এম কাদের।
শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী, যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয় এবং এরশাদের বড় ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদকে নিয়ে গুলশান-২ নম্বরে রওশনের বাসায় যান কাদের।
রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির নতুন চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে আশির্বাদ করেন বলে দলের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরে দুপুরের খাবার খেয়ে তারা দীর্ঘ সময় পার্টির বর্তমান কর্মসূচি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
“পার্টির চেয়ারম্যান (জিএম কাদের) মহোদয় বলেছেন, বেগম রওশন এরশাদ আমাদের অভিভাবক। তার স্নেহ ও পরামর্শে জাতীয় পার্টিকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।”
গত ১৪ জুন এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ছোট ভাই জি এম কাদের। দলটির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, মৃত্যুর আগে এরশাদই এই সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন।
তবে ওই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না দলের এরশাদের স্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। এরশাদ জীবিত থাকাকালেই জাতীয় পার্টিতে পদায়ন ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত নিয়ে রওশন ও জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব ছিল প্রকাশ্য।
এরশাদ অসুস্থ থাকাকালে গত এপ্রিলে জিএম কাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর দলীয় কোনো সভায় তার পাশে রওশন ও তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দলের জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন নেতাকে কখনও দেখা যায়নি।
জাতীয় পার্টি এখন যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করলেন জিএম কাদের।
সকালে বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, জাতীয় পার্টি এখন যৌথ নেতৃত্বে চলছে।”
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের সভাপতিমণ্ডলীর ’৯৯ শতাংশ’ সদস্য তাকে সমর্থন করেছে বলেও দাবি করেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, “নাইনটি নাইন পারসেন্ট প্রেসিডিয়াম মেম্বারদের সহযোগিতা নিয়ে আমি চলছি। আমি তো আর কারো মনের কথা জানি না। তবে আমাদের কাজের ব্যাপারে কারও দ্বিমত আছে, এমনটা আমি মনে করি না।”
জিএম কাদের দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের গুরুত্বপূর্ণ সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, ফখরুল ইমামসহ কয়েকজন আসছেন না।
দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনুপস্থিতির প্রশ্ন এড়াতে গিয়ে জি এম কাদের সব সময় বলে আসছেন, দলের সব বৈঠকে সব নেতার আসার প্রয়োজন নেই।
সকালে তিনি বলেন, “সকলের মতামত নিয়ে দল চলবে। কারও কোথাও বক্তব্য থাকলে পার্টি ফোরামে কথা বলতে পারবেন। সেখানে সমস্ত জিনিস পরিষ্কার করব। আমরা নামে বিশ্বাসী নই, কাজে বিশ্বাসী।”