২৮ দিন ধরে হাসপাতালে নিউমোনিয়া চিকিৎসা নেওয়ার পর রোববার বাড়ি ফিরেছেন লতা
২৮ দিন ধরে হাসপাতালে নিউমোনিয়া চিকিৎসা নেওয়ার পর রোববার ( ৮ ডিসেম্বর) বাড়ি ফিরেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। বাড়ি ফেরার খবরটি লতা নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘২৮ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার নিউমোনিয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে ছাড়ছিলেন না, তাই এতদিন হাসপাতালেই ছিলাম। চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’
এদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে সুর সম্রাজ্ঞীর নতুন ছবি। যেখানে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের নার্সদের সঙ্গে দেখা যায় লতা মঙ্গেশকরকে। ২৮ দিন ধরে যারা সুর সম্রাজ্ঞীর সুস্থতা করেন প্রতি নিয়ত, সেই নার্সদের সঙ্গেই লতাজির ছবি প্রকাশ্যে আসে।
লতা মঙ্গেশকরের সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ভক্তদের মধ্যে জোর জল্পনা শুরু হয়। সুর সম্রাজ্ঞী যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেই প্রার্থনা করেন কেউ কেউ। আবার কেউ বলতে শুরু করেন, ব্যক্তিগত ছবি এভাবে প্রকাশ্যে না আনাই ভালো।
গত ১১ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সী এ শিল্পীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুরুতে তার শ্বাসকষ্ট ছিল। পরে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাকে রাখা হয়েছিল।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের ইন্দোরে মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। ৭০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গান ও সুরের ইন্দ্রজালে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন তিনি। চলতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর তার বয়স ৯০ বছর পূর্ণ হয়েছে।
লতা মঙ্গেশকর প্রথম গান গেয়েছিলেন মারাঠি সিনেমা ‘কিতি হাসাল’-এর (১৯৪২) জন্য। এরপর ‘মজবুর’ (১৯৪৮) সিনেমায় ‘দিল মেরা তোড়া’ শিরোনামের একটি গানে কণ্ঠ দেয়ার সুযোগ পান তিনি। তবে তার প্রথম তুমুল জনপ্রিয় গান হলো ‘মহল’ (১৯৪৯) সিনেমার ‘আয়েগা আনেওয়ালা’। এতে অভিনয় করেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালা।
১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান লতা মঙ্গেশকর। নব্বই দশকে এ আর রাহমান ও প্রয়াত গজল সম্রাট জগজিৎ সিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছেন লতা মঙ্গেশকর। প্রয়াত যশ চোপড়ার প্রায় সিনেমার গানেই কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
গান গেয়ে অনেক বহু সম্মাননা অর্জন করেছেন লতা মঙ্গেশকর। এর মধ্যে রয়েছে পদ্মভূষণ (১৯৬৯), দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৯), ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (১৯৯৩), পদ্মবিভূষণ (১৯৯৯), এনটিআর জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ (২০০১)। সর্বশেষ চলতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি ‘ডটার অব দ্য ন্যাশন’ উপাধি লাভ করেন।