আজারবাইজানের ঠিকাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে বন্ধের উপক্রম দুই গ্যাসকূপ খনন কাজ
ঠিকাদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এবার বন্ধ হতে বসেছে, দেশের সম্ভাবনাময় দুটি গ্যাসকূপ খননের কাজ। এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও খনন কোম্পানি বাপেক্সের সাথে চুক্তি বাতিলের হুমকি দিচ্ছে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানি সকার। ক্ষতিপূরণ আর বকেয়া বিল বাবদ প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে দাবি করেছে ১৪২ কোটি টাকা। সরকার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা হবে জানালেও, জ্বালানি বিশ্লেষকদের দাবি- আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় থমকে আছে এই খাত।
সমুদ্রবক্ষ আর স্থলভাগ মিলে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রমাণিত মজুদ ছিলো ২৮ টিসিএফ বা ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট, যেখান থেকে বছরের পর বছর গ্যাস উত্তোলনের ফলে সেই মজুদ এখন নেমে এসেছে ১২ টিসিএফ।
দেশে নতুন করে, বহুদিন ধরেই নেই প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের তেমন জোরালো কর্মসূচি। এরইমধ্যে, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে যখন স্থলভাগে তিনটি গ্যাসকূপ খননে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ব জ্বালানি কোম্পানি সকার একিউএস এর সাথে চুক্তি করেছিলো বাপেক্স, তখন সব মহলেই তা প্রশংসিত ছিলো, কেনো না অপেক্ষাকৃত কম দরে এটি সম্পন্ন হয়েছিলো।
কিন্তু, তিনটি কূপের মধ্যে একটির খনন শেষ হতে না হতেই বাপেক্সের কাছে প্রত্যাশিত বিল না পাওয়ার অভিযোগে, চুক্তি বাতিলের নোটিশ দিয়েছে সকার। তাদের দাবি- বার বার এ ব্যাপারে সরকারকে চিঠি দিয়েও কোনো জবাব পাননি তারা। কোম্পানিটি এখন দ্বিতীয় কূপ খননের জন্য নিয়ে আসা যন্ত্রপাতিও ফেরৎ নিয়ে যেতে চায়। এদিকে, বাপেক্সের দাবি- সকার চুক্তি ভঙ্গ করেছে, তাই বিল পরিশোধে এই দেরী।
এ প্রসঙ্গে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মো. আব্দুল হান্নান বলেন, সকার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তাদের ধারণা ভুল।
সকারের দাবি, সময়মতো বিল পরিশোধসহ বিষয়টির নিষ্পত্তি না হলে আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে যেতে চায় তারা।
যদিও, সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানাচ্ছেন- দেশের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের সাথে আমাদের অনেক কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরী হয়েছে। দুই পক্ষকে এক সাথে বসে এটার সমাধান করতে হবে।
খাগড়াছড়িতে সেমুতাং দক্ষিণ-১ নম্বর কূপ খননের পরও কোনো গ্যাস পায়নি সকার। এছাড়া, তাদের খনন করার কথা ছিলো বেগমগঞ্জ-৪ আর মাদারগঞ্জ-১ কূপের। এ জন্য দর নির্ধারিত হয়েছিলো ২৮০ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতির জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম।
তিনি বলেন, এটা সরকারের দুর্বলতা। গাফিলতি রয়েছে। কাজের গতি এতো ধীর হলে হবে না।
বিদ্যুৎ খাতের মতো করে জ্বালানি খাতকে এগিয়ে নিতেও, সরকারকে আরো সতর্কভাবে এসব বিষয় তদারকের তাগিদ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।