খেতে পায় না ৮০ কোটি মানুষ
কবিগুরু ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় লিখেছিলেন- “এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি/ রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।” পৃথিবীতে ধন্যবৈষম্য এক শ্রেণির মানুষকে যেমন বিলাসী জীবনে ডুবিয়ে রাখে, অন্যশ্রেণির মানুষকে আবার রাখে অনাহারি আর পীড়িত করে। ধনীদের ঘরে যখন বাহারি খাবারের পসরা সাজানো থাকে, গরিবের তখন নুন আনতে পান্না ফুরোয়। আবার উপর তলার মানুষেরা সবসময়ই ধনহীনদের করে শোষিত-বঞ্চিত। গোটা বিশ্বে এমন চিত্র শত-সহস্র বছরের।
বিশ্বজুড়ে ধনবৈষম্য যখন দিনদিনই বাড়ছে তখন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা এফএও-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়-সারা বিশ্বে অন্তত ৮২ কোটি মানুষ রাতে না খেয়েই ঘুমাতে যায়।
এফএও এর প্রতিবেদনে ঠিক উল্টো চিত্রও উঠে এসেছে। দেখা গেছে, বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষ অতিরিক্ত খাবার খেয়ে খুব মোটা হয়ে গেছে।
যেখানে ৮২ কোটি মানুষ একবেলা কোনো খাবার পায় না, সেখানে সারা বিশ্বে প্রতি বছর অন্তত ২২ কোটি ২০ লাখ টন খাবার নষ্ট বা অপচয় করা হয়।
ইউরোপ এবং পূর্ব আমেরিকার মানুষ গড়ে প্রতি বছর ৯৫ থেকে ১১৫ কিলোগ্রাম খাবার না খেয়ে ফেলে দেয়। সাব সাহারান আফ্রিকা এবং এশিয়া অঞ্চলে খাবার ফেলে দেয়ার প্রবণতা সেই তুলনায় অনেক কম। এই দুই অঞ্চলের মানুষ গড়ে প্রতি বছর ছয় থেকে ১১ কেজি খাবার ফেলে দেয়।
উন্নত দেশগুলোতে বছরে মাথা পিছু খাবারের পরিমাণ ৯০০ কেজি, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোতে তা প্রায় অর্ধেক (৪৬০ কেজি)।