পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে দিল্লির
ভারতের রাজধানী দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে। গত ৩৬ ঘণ্টায় বড় ধরনের কোনও সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ১৪৪ ধারা শিথিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শেষ রাতের দিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া এলাকায় ৭০ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ৪৮টি মামলা দায়ের করে। আটক করা হয়েছে ৪ শতাধিক মানুষকে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৩০ জনকে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মানুষের উচিত হবে গুজবে কান না দেয়া এবং যে দুষ্কৃতীরা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে তাদের ফাঁদে পা না দেয়া। দু’জন নিরাপত্তা কর্মী মারা গিয়েছেন। আহত প্রায় ৭০। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার নর্দমা থেকে এক আইবি কর্মকর্তা অঙ্কিক শর্মার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এই কমকর্তাকে হত্যার দায়ে দিল্লির ক্ষমতায় থাকা আম আদমি পার্টির কাউন্সিলর তাহির হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সহিংসতার ঘটনার তদন্তে ২টি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে তুলে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন, রাজ্য সরকার সহিংসতায় আহত সবার চিকিৎসার খবর বহন করবে। এমনকি তারা যদি বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এছাড়া নিহতদের স্বজনদের ১০ লাখ রুপি এবং যাদের বাড়ি-ঘর ও দোকান হারিয়েছেন তাদেরকে ৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন অভিযান তদারকিতে ১৮জন সাবডিভিশনার ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিমবিদ্বেষী ঘৃণাবাদী বক্তব্য দেন বিজেপি নেতারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথসহ বহু নেতা ঘৃণাবাদী বক্তব্য দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার সহিংসতায় উসকানি ছড়ান দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। এরপরই দিল্লির পূর্ব অংশে শুরু হয় নজিরবিহীন সহিংসতা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সহিংসতায় নিহত হয় ৩৮ জন।