শিগগিরই ব্যাংক কমিশন গঠনের পরামর্শ বিশ্লেষকদের
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা উত্তরণে শিগগিরই ব্যাংক কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, কমিশনকে রাখতে হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। আর সুপারিশ বাস্তবায়নে থাকতে হবে স্বদিচ্ছা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংসদে ৮ হাজার ২৩৮টি ঋণ খেলাপি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানে তালিকা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। মোট খেলাপি প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা। গেলো বছরের মাঝামাঝিতে খেলাপির অঙ্ক দাঁড়ায় ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। মোট ঋণের ১১ শতাংশই খেলাপি। যদিও বিশ্বব্যাংক বলছে, খেলাপের এ হার দ্বিগুণ। গেলো ১০ বছরে নানা অনিয়মে ধীরে ধীরে নাজুক অবস্থায় দিকে যাচ্ছে আর্থিক খাত। এমন অবস্থায় বেশ কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে ব্যাংক খাত সংস্কারে জন্য প্রয়োজন একটি স্বল্প মেয়াদি স্বতন্ত্র কমিশন।
সবশেষ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, কমিশন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে; তবে তা সময় সাপেক্ষ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক কমিশন আমরা করব কিন্তু সময় লাগবে।
এর আগে নব্বইয়ের দশকে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরাবস্থায় ২৬ শতাংশ ঠেকেছিলে ঋণ খেলাপি। পরে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে সংস্কার কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রাণ ফিরে পায় আর্থিক খাত। ২০০৮-২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের হার কমে দাঁড়ায় ৬-৭ শতাংশে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ছাড়া কাজে আসবে না কমিশন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংক কিন্তু নয়ছয় হয়ে গেছে। এটা ঠিক করা কঠিন হবে। ঠিক করতে হলে আগে সরকারের উদ্দেশ্য ঠিক হতে হবে।
আর্থিক খাতের এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে ব্যাংক কমিশনের জোরা দাবি জানিয়ে আসছে বেসরকারি সংস্থা সিপিডি। তারা বলছে, কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে যত দ্রুত কাজটি করা যাবে ততই দেশের আর্থিক খাতের জন্য মঙ্গলজনক।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটা যত তাড়াতাড়ি করা যায় ততোই ভালো।
আর্থিক খাত সংস্কার করে আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে না পারলে আরো বড় সঙ্কটে পড়বে খাতটি। আর দীর্ঘ মেয়াদে ভুক্তোভোগী হতে হবে গোটা বাংলাদেশের অর্থনীতির। এমন মত বিশ্লেষকদের।