দেশের বিভিন্ন স্থানে নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেয়ায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নীলফামারী:
অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রির দায়ে নীলফামারীর ছয় চাল ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক দুটি টিম বড় বাজারে অভিযান চালিয়ে এসব ব্যবসায়ীকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের তথ্য মতে, বিক্রম চন্দ্রকে এক হাজার টাকা, মধু কুমার রায়কে পাঁচশত টাকা, রবী চন্দ্র রায়কে পাঁচশত টাকা, অনুকুল চন্দ্র রায়কে পাঁচশত টাকা এবং মধু চন্দ্র রায়কে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মাসুদুর রহমান।
অপরদিকে মনা সরকার নামে আরেক চাল ব্যবসায়ীকে দেড় হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোখসানা বেগম।
নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দাম নেয়ার দায়ে ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর ৩৮ ধারা মতে তাদের জরিমানা করা হয়।
বেনাপোল:
আলু, চাল ও নিত্যপণ্যের বাজারে অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও অনাদায়ে এক বছরের জেলের আদেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শার্শার নাভারন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে এ জরিমানা আদায় করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মণ্ডল।
তিনি জানান, করোনার অজুহাতে কেজিতে চালের দাম বেশি রাখা ও মূল্য তালিকা না টাঙানোর অভিযোগে স্বজন এন্টারপ্রাইজ নামে এক প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা ও দিনু এন্টারপ্রাইজকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এসময় বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। বাজার সহনশীল পর্যায়ে রাখতে মনিটরিং সহ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করায় ৭ জন দোকান মালিককে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভোক্তারা জানান,আজ সকালে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকলেও দুপুরের আগেই হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠে সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুরের বাজার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জগন্নাথপুর পৌরশহরের সদরের জগন্নাথপুর বাজারে জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী (এস্যিান্ড) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে থানা পুলিশের উপস্থিততে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বেশি দামে পেঁয়াজসহ দ্রব্য বিক্রির করার দায়ে সাতটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
যে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে সেগুলো হলো হাবিব স্টোর ১০ হাজার, রিয়ান স্টোর ২০ হাজার টাকা, বাউধরণ স্টোর ১০ হাজার, ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া ৫ হাজার, জুবায়ের ৫ হাজার, শংকর রায় ৫ হাজার ও শ্যামপদ ৫ হাজার টাকা।
ক্রেতা শামীম মিয়া বলেন, সকালের দিকে বাজারে খাদ্যদ্রব্যে মূল্যে স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে বাজারে ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলু পেঁয়াজ, চালের দাম বেড়ে যায়। দ্রুত প্রশাসনিক তদারকি না হলেও তীব্র সংকট দেখা দেবে দ্রব্যে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) ইয়াসির আরাফাত জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মাস্ক, চাল, পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়াচ্ছে এমন অভিযোগে আমরা অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় সাতটি দোকান থেকে ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়েছে। এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করার জন্য ব্যবসায়ীদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
ক্রেতা ও স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় জগন্নাথপুরে হঠাৎ করে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যায়। গতকাল সকাল ১০টায় দিকে জগন্নাথপুর বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা মূল্যে বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হলেও দুপুর ১২ টা থেকে ৬০ খেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।। একইভাবে ১৫ টাকা মূল্যের প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫টা দরে বিক্রি হয়। ৫০ কেজি চালের বস্তায় ১৭০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকায় মূল্যে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আজ সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতাদের ঢল নামে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করতে কেউ কেউ বেশি বেশি করে পণ্য ক্রয় করেছেন।