টঙ্গীতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সেনাবাহিনীর ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প
শেখ রাজীব হাসান, টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
মরণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গীর ৪৯নং ওয়ার্ড এরশাদনগর এলাকায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে বস্তিবাসীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় এরশাদনগর এলাকায় মজিদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্থানীয় অসহায় ও গরিব মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের সহযোগীতায় চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে সেনাবাহিনী। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সেনাবাহিনী স্থ্নাীয়দের মাঝে চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরন করে। এসময় তারা করোনা প্রতিরোধে নানারকম দিক নির্দেশনা দেয়।
এসময় বাড়ীর বাইরে বের হলে মুখে মাকস ও সব সময় হ্যান্ড সেনেটাইজার দ্বারা হাত, পা পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়ে প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বলেন, কোভিড-১৯ অন্যান্য ভাইরাস থেকে অপেক্ষাকৃত বড় এবং ভয়ানক ছোঁয়াচে, মানুষ থেকে মানুষে অতিদ্রæত ছড়িয়ে পড়ে।
জ্বর, কফ-কাশি, হাঁচি, মাংসপেশীর বেদনা, গলাদাহ, যা দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ফুসফুসের সমস্যা সৃষ্টি করে। দ্রæত চিকিৎসা না হলে স্পঞ্জি ফুসফুস শ্লেটের মতো শক্ত হয়ে যায়। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে এখন সবাইকে যথাসম্ভব বাড়িতেই থাকতে বলা হচ্ছে। স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরাও অনেকটা ঘরবন্দী।
কিন্তু যে বাড়িতে অবস্থান করা হচ্ছে, তা কি ঝুঁকিমুক্ত? এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে বাড়িও ঝুঁকিমুক্ত রাখা যায়।
তারা বলেন, বাড়িতে সবাইকে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস রপ্ত করতে হবে। প্রতিবার খাবার রান্না বা প্রস্তুতের আগে ও পরে, খাবার খাওয়ার আগে ও পরে, বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে, বাইরে থেকে বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাবান-পানি তাৎক্ষণিকভাবে না পাওয়া গেলে হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করুন।
এ ছাড়া দরজার হাতল, নব, টেলিফোন, রিমোট, সুইচসহ যেসব বস্তু বারবার ব্যবহৃত হয়, সেগুলো নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাড়ির মেঝে এবং অন্যান্য তল পরিষ্কার রাখার দুটি ধাপ আছে। একটি হলো ক্লিনিং বা পরিচ্ছন্ন করা, আরেকটি হলো ডিজইনফেকটিং বা জীবাণুনাশ করা।
প্রথমে পানি, ডিটারজেন্ট বা ফ্লোর ক্লিনারজাতীয় উপাদান দিয়ে মেঝে, তল ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে। এরপর জীবাণুনাশক উপাদান দিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। জীবাণুনাশক হিসেবে বিøচ বা ৭০ শতাংশ অ্যালকোহলের মিশ্রণ কার্যকর। বাড়িতে বিøচ মিশ্রণ তৈরি করতে এক গ্যালন পানিতে ৫ টেবিল চামচ বিøচ মেশাতে হবে।
প্রতিদিন কয়েকবার এভাবে রান্নাঘর, বাথরুম ও অন্যান্য ঘরের মেঝে, যেকোনো তল (যেমন থালাবাসন ধোয়ার জায়গা, সিঁড়িঘর, বারান্দা, টেবিল, রান্নাঘরের কেবিনেট টপ, সিঙ্কের আশপাশ ইত্যাদি) পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার করার আগে অবশ্যই হাতে গ্লাভস পরে নেবেন। আর কাজ শেষে সেটা ফেলে দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবেন।
কার্পেট, মাদুর, ম্যাট ইত্যাদি জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। বাড়ির প্রতিটি ঘরে টিস্যু বা কিচেন রোল রাখুন, যাতে কাশি বা হাঁচির সময় হাত বাড়ালেই টিস্যু পাওয়া যায়। টিস্যু বা ময়লা ফেলার পাত্রটি ঢাকনাযুক্ত হলে ভালো। কাঁচা মাছ-মাংসের বর্জ্য একটি পলিথিনে মুড়ে মুখ আটকে বিনে ফেলুন। এরপর অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন। রান্না আর কাটাকুটির কাজে ব্যবহৃত বোর্ড, ছুরি, বঁটি সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে রাখুন।
তারা বলেন, নানা কাজে বের হতেই হবে। তা ছাড়া বাড়িতে বাইরের লোক, গৃহকর্মীর যাতায়াত আছে। বাইরে থেকে ফিরে যেকোনো বস্তু স্পর্শ করার আগেই হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। বাইরে পরে যাওয়া জামাকাপড় দ্রæত বদলে ফেলুন। অতিথির সঙ্গে হাত মেলানো থেকে বিরত থাকুন।
বাইরের যেকোনো পার্সেল, প্যাকেট বা অন্য কিছু হাতে নেওয়ার পর হাত ধুয়ে ফেলবেন। প্রবেশের মুখেই সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা যায়।
তারা আরোও বলেন, আমরা নিজেরা সচেতন না হলে কেউ সচেতন করাতে পারবে না তাই দেশ ও জাতিকে বাচানোর জন্য এবং পরিবারের প্রিয় মানুষ গুলোর মুখের হাসি দেখার জন্য সরকারের দেওয়া সকল নির্দেশনা মেনে চলি ও অপরকে উদ্ভোদ্ধ করি।