কঙ্গনাকেও আত্মহত্যার প্ররোচণা দেয়া হয়েছিল!
বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। তিনি জানিয়েছেন, বলিউডের তারকা অভিনেতা হৃতিকের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে রোশান পরিবারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে স্বজনপ্রীতির শিকার হয়েছেন বারবার।
সম্প্রতি তিনি জানান, বলিউডের জনপ্রিয় গীতিকার ও কবি জাভেদ আখতার একবার তার বাড়িতে ডেকে আমাকে রীতিমতো ধমক দেন। তিনি বলেছিলেন, রাকেশ রোশনরা (হৃত্বিকের বাবা) বলিউডে অনেক বড় পরিবার। ওদের কাছে যদি তুমি ক্ষমা না চাও, তাহলে তোমাকে জেলেও যেতে হতে পারে। এমনকি, রোশন পরিবারের কাছে ক্ষমা না চাইলে, আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন উনি।
কঙ্গনা আরও জানান, জাভেদজি এও বলেছিলেন যে, রাকেশ রোশনদের কাছে ক্ষমা না চাইলে, আমার কাছে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না! জাভেদ আখতার এটা কেন ভাবলেন যে আমি আত্মহত্যা করে বসব? আমি একপ্রকার নিশ্চিত, যে সুশান্তকেও এ রকম কোনো কথা বলা হয়েছিল। জানতে চাই যে, এই কাজটা সুশান্তের সঙ্গে কে করলেন?
তিনি আরও বলেন, একসময়ে আমি যখন যশ রাজ ফিল্মসের ‘সুলতান’ ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম, আদিত্য (যশ রাজের কর্ণধার) আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন যে আমার সঙ্গে আর কোনো কাজ কেউ করবেন না। সবাই আমার পাশ থেকে সরিয়ে গিয়েছিল সেদিন। তারপর থেকেই আমি একাকিত্বে ভুগতাম। মুখোশ টেনে ছিঁড়ে ফেলা উচিত এদের সবার।
এদিকে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউডপাড়া যেন কেঁপে উঠেছে। অনেকেই তাদের নিজেদের অবস্থান ব্যাখা করেছেন। কেউ বা সুশান্তকে পরিকল্পিতভাবে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়ার কথাও বলেছেন। বলিউডের অন্যতম অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত তাদের মতোই একজন। তিনি সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনাতেও কার্যত নেপোটিজমকেই দুষেছেন।
ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও পোস্টে অভিনেত্রীর তোপ, কাই পো চে-তে অভিনয়ের জন্য কখনই প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয়নি সুশান্তকে। গলি বয়ের মতো খারাপ সিনেমাকে এত পুরস্কার দেয়া হলো, অথচ ছিঁচোড়ের মতো ভালো সিনেমাকে কেন উপেক্ষা করা হয়েছিল?
সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে কঙ্গনা বলেন, সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা ছিল নাকি পরিকল্পিত খুন? তবে সুশান্তকে অন্যদের কথায় বিশ্বাস না করে মা যা শিখিয়েছিল, সেটাই মনে রাখা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন কঙ্গনা।অভিনেত্রীর কথায়, বিক্রি হয়ে যাওয়া সাংবাদিকদের কথায় বিশ্বাস করা উচিত হয়নি সুশান্তের। ওই সাংবাদিকদের কাছে সুশান্ত মাদকাসক্ত অথচ সঞ্জয় দত্তের আসক্তি খুব মিষ্টি বিষয়।
স্বজনপোষণ বা নেপোটিজম অভিযোগে বরাবরই বিদ্ধ হয়েছে বলিউড। ধোনির বায়োপিক সুপারহিট হওয়ার পরও সুশান্তকে সেভাবে বড় প্রোজেক্টে সুযোগ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বলিপাড়ার হেভিওয়েটদের বিরুদ্ধে।
টেলিভিশন থেকে বলিউডে পা রেখেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। প্রথম ছবি কাই পো চে; বাণিজ্যিক ভাবে সফল। পছন্দ হয়েছিল সমালোচকদেরও। দ্বিতীয় ছবি ধোনি: দ্য আনটোল্ট স্টোরি; বক্সঅফিসে সুপার হিট। জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন সুশান্ত। একে একে রাবতা, কেদারনাথ, ব্যোমকেশ বক্সী, শুদ্ধ দেশি রোমান্স, ছিঁচোড়ে'র মতো সিনেমায় অভিনয় করেন। প্রত্যেক ছবির ব্যবসা ভালোই ছিল। তবু কেন হতাশা?
বলিপাড়ার অনেকের মতেই, ধোনির বায়োপিকের পর সেভাবে সোলো; হিট পাননি সুশান্ত। কার্যত পড়তির দিকেই যাচ্ছিল সুশান্তের ক্যারিয়ার। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে বাসা বাঁধছিল হতাশা।