মহামারীর মধ্যে আকাশ চুম্বী রেকর্ড স্বর্ণের , ভরি ৭০ হাজার
করোনা ভাইরাসের মহামারীর মধ্যে স্বর্ণের দাম আকাশ চুম্বী হয়ে গেছে। এর আগে কখনো এত বেশি দাম হয়নি। কোন গ্রাহক যদি সবচেয়ে ভাল মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি ওজনের সোনার গহনা কিনতে যায় তাকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আগারাওয়ালা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সাম্প্রতিক সময়ে সোনার দর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারেও তাদের দাম বাড়াতে হয়েছে।
“আমরা হিসাব করে দেখেছি, বিশ্ব বাজারে প্রতি ভরি গোল্ডের দাম ৭ হাজার টাকা বেড়েছে। আমরা সেখানে ৫ হাজার ৭১৫ বাড়িয়েছি।”
অতীতে দেখা গেছে, দেশের বাজারে সোনার দাম সাধারণত ভরিতে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়।
তবে এবার সবচেয়ে ভালো মানের সোনার দর (২২ ক্যারেট) এক লাফে ৫ হাজার ৭১৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে জুয়েলার্স সমিতি।
মঙ্গলবার থেকে এই মানের প্রতি ভরি সোনা ৬৪ হাজার ৪২ টাকার পরিবর্তে ৬৯ হাজার ৮৬৭ টাকায় কিনতে হবে। জুয়েলার্স সমিতি সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।
এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। ফলে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে স্বর্ণের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছেন।
নতুন দর অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম পড়বে ৬৯ হাজার ৮৬৭ টাকা, ২১ ক্যারেট ৬৬ হাজার ৭১৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৫৭ হাজার ৯৭০ টাকা এবং সনাতনি ৪৭ হাজার ৬৪৭ টাকা।
তবে রুপার দাম প্রতি ভরি ৯৩৩ টাকা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
দেশের বাজার সোমবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৬৪ হাজার ৪২ টাকা, ২১ ক্যারেট ৬১ হাজার ৮১৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ৫৬ হাজার ৮০৪ টাকায় বিক্রি হয়। সনাতনি স্বর্ণ প্রতি ভরি বিক্রি হয় ৪৪ হাজার ৩১ টাকায়।
স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববাজারের স্বর্ণের বিনিয়োগ বেড়েছে। যার কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায় উঠেছে।
এছাড়া দেশের বাজারে স্বর্ণের সঙ্কট রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের বাজারে স্বর্ণের বিক্রি প্রায় ৮৫ শতাংশ কমে গেছে। এর মধ্যে স্বর্ণের দাম বাড়ায় বিক্রিতে বড় প্রভাব পড়বে।
আগামীতে স্বর্ণ বিক্রি শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এর আগে সবশেষ ২৮ মে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করেছিল বাজুস। ওই দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৬৪ হাজার ১৫২ টাকা।
২১ ক্যারেট ৬১ হাজার ৮১৯ এবং ১৮ ক্যারেটের দাম ৫৬ হাজার ৮০৪ টাকা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে স্বর্ণের দাম ৪৪ হাজার ৩২ টাকা।