তদন্তে ফেঁসে গেছেন মধুহাটীর চেয়ারম্যান সহ দুই চাল ডিলার
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ
তদন্তে ফেঁসে গেছেন মধুহাটীর চেয়ারম্যান ও চালের দুই ডিলার। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির চাল বিতরণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি।
গত ৭ জুন তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত সরেজমিন তদন্ত করতে গেলে অভিযোগকারীরা চেয়ারম্যোন ফারুক হোসেন জুয়েল ও দুই ডিলার ইমদাদুল এবং জিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সাক্ষি দেন।
তদন্তকালে একই জাতীয় পরিচয় পত্রের (মৃত ব্যক্তিসহ) বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির চাল উত্তোলন, একজনের কার্ডের চাল অন্যজনকে প্রদান ও ওজনে কম দেওয়ার সত্যতা পান বলে গত ১৫ জুন তারিখে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির চালের ডিলার ইমদাদুল এবং জিয়া তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নি। এ সময় তারা নিশ্চুপ ছিলেন। ফলে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় দুই ডিলার মধুহাটী ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসুচির চাল বিতরণে নয় ছয় করেছেন মর্মে প্রতিয়মান হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, চেয়ারম্যানের তালিকায় নাম না থাকলেও উপজেলা খাদ্য অফিসারের তালিকায় নাম আছে কুবিরখারী গ্রামের নুরুল ইসলামের। তিনি কোন চাল পাচ্ছেন না।
একই ভাবে বেড়াশুলা গ্রামের পিকুল, রবিউল, কমতা গ্রামের জাকির ও শরীফ, নওদাপাড়ার ফেরদৌসি, শহরবানু, আক্তারুজ্জামান, রেশমা, শামিম রেজা, গোপালপুরের দিজেন্দ্র নাথ, আলতাফ হোসেন ও বেজিমারা গ্রামের আবুল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি চাল পান না। রুপালী খাতুন নামে এক মহিলা প্রথম ৬ মাস চাল পেলেও পরবর্তীতে চাল পাননি। ৭টি জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে ৩২ জনের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।
৬ জনের নাম ও ঠিকানা দুই তালিকায় ভিন্ন রকম পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা। এ সব বিষয়ে মধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন জুয়েল তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেন, ৩৪ জনের তালিকা মৃত্যু ও সচ্ছল হওয়ার কারণে হালনাগাদ করে নতুন নাম অর্ন্তভক্তি করা হয়েছে। এদিকে চেয়ারম্যান ও দুই ডিলারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য প্রমানিত হওয়ার পরও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
অভিমতসহ তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পাঠাতে বিলম্ব করা হচ্ছে। ফলে চেয়ারম্যান বরখাস্ত বা ডিলারশীপ বাতিলের কালক্ষেপনে অভিযোগকারীরা নানা প্রশ্ন তুলছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরিফ উজ জামান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত বিষয়টি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।