স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে কপাল পুড়ল সাবরিনার
করোনার নমুনা পরীক্ষায় প্রতারণা মামলায় জেকেজির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে বহিষ্কৃত ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে হাজির করা হয়।
প্রাথমিক অবস্থায় তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক হাসানাত খন্দকার জেকেজির জালজালিয়াতির তদন্ত করেছেন। তিনি দেশের এক শীর্ষস্থানীয় গণমধ্যমকে জানান, ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় জাল জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেছিলেন। তবে পুলিশ মনে করে তার অগোচরে কিছুই ঘটেনি। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্বও এড়াতে পারেন না।
পুলিশ বলছে, যারা জেকেজিতে পরীক্ষা করিয়েছে, সেই সনদগুলো জব্দ করেছে পুলিশ। ওই সনদগুলোর গায়ে সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড হেলথ সার্ভিসেসের (আইডিইএসএইচআই) সিল ছিল। তারা প্রতিষ্ঠানটিতে সনদগুলো পাঠিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন, ওগুলো ভুয়া ছিল। সাধারণত যাদের উপসর্গ নেই বা কম তাদের পরীক্ষা না করেই নেগেটিভ প্রতিবেদন দেয়া হয়েছিল। এ করে জেকেজি দিনে প্রায় সাত লাখ টাকা পর্যন্ত সংগ্রহ করে। পরে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। কর্মীদের মধ্যে যারা ৩০ হাজার টাকা বেতন পেতেন, তারা বলতে শুরু করেন, লাখ লাখ টাকা রোজগার করে, কেন তাদের কম বেতন দেয়া হচ্ছে। পুলিশ বলছে, টাকার ভাগ নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর মধ্যেও ঝামেলা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত সাবরিনাকে পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন আরিফুল। কিন্তু চেকটি প্রত্যাখ্যাত হয়। সাবরিনা তখন একটি উকিল নোটিশও পাঠান।
সাবরিনা একাধিকবার বলেছেন, তিনি জেকেজিতে স্বেচ্ছাশ্রম দিতেন। জালিয়াতির খবর তিনি জানতেন না। জানার পরই জুনের প্রথম সপ্তাহে তিনি সরে আসেন। তবে পুলিশ এ কথা মানতে নারাজ। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেকেজি নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব পায় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। এর অল্প কিছুদিন পরই তারা অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করতে থাকে। এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) লিখিতভাবে জেকেজিকে সতর্কও করে। তারপরও তারা এ কাজ চালিয়ে যায়।