সন্ধানী ইন্স্যুরেন্স ও রিকো এনজিও কর্মকর্তা ফিরোজ ও শান্তার বিরুদ্ধে পলিসির টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে গ্রাহকদের সাংবাদিক সম্মেলন
মোঃ মামুন মোল্যা, ফুলতলা (খুলনা)
খুলনার ফুলতলায় সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এবং রিকো এনজিও’র দু’ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১৩ গ্রাহকের ১২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পাওয়া গেছে। ঐ দু’ প্রতিষ্ঠানের দু’ কর্মকর্তা হলেন ফুলতলার পায়গ্রাম কসবা গ্রামের মৃত বাবর আলী তরফদারের কন্যা ও সাবেক ইউপি সদস্য নাহিদা সুলতানা শান্তা এবং আটরা ডাক্তারবাড়ী এলাকার আঃ মান্নান তালুকদারের পুত্র কামরুজ্জামান তালুকদার ওরফে ফিরোজ ভ‚য়া ভাউচার প্রদান করে গ্রাহকদের ১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস এর টাকা আত্মসাত করেছে এমন অভিযোগে প্রতারনার শিকার গ্রাহকেরা গতকাল রোববার বিকালে প্রেসক্লাব ফুলতলায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রাহক তরফদার মাসুমের স্ত্রী জোসনা বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতারণার শিকার গ্রাহক সুলতানা রাজিয়া, রিতা সরকার, হোসনেয়ারা বেগম, জেসমিন আক্তার, রেখা রানী বিশ্বাস, শেখ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এনজিও রিকো’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ কামরুজ্জামান ফিরোজ এবং হিসাব রক্ষক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোসাঃ নাহিদা সুলতানা শান্তা সাধারণ গ্রাহকদের নিকট থেকে সন্ধ্যানী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এবং এনজিও রিকো গত ২০১১ সাল থেকে গ্রাহকদের বিভিন্ন মেয়াদে ডিপিএস প্রকল্পের সঞ্চয়ী কিস্তির টাকা গ্রহণ করে। গ্রাহকদের মধ্যে ফুলতলার পায়গ্রাম কসবা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মজিদ দফাদারের পুত্র তরফদার মাসুম (৩৫) মাসিক কিস্তি ৫ হাজার ২শ’ ৬৯ টাকা হরে ১০ বছর মেয়াদি ডিপিএস,
কাজী আনিছুর রহমানের স্ত্রী মিসেস সুলতানা রাজিয়া (৫৫) মাসে ২শ’ টাকা হারে ৭ বছর মেয়াদি, সাধন সরকারের স্ত্রী রিতা সরকার (৪৫) ১শ’ টাকা হারে ৩ বছর মেয়াদি, মজিদ তরফদারের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৫৫) প্রতি বছর ৫ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা হারে ৮ বছর মেয়াদি, শেখ নজরুল ইসলামের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪৫) ১০ হাজার ৭শ’ টাকা হারে ৮ বছর মেয়াদি, রাজকুমার বিশ্বাসের স্ত্রী রেখা রানী বিশ্বাস (৬০) প্রতি মাসে ১শ’ টাকা হারে ৮ বছর মেয়াদি, মৃতঃ ওসমান শেখের পুত্র শেখ দেলোয়ার হোসেন (৪২) ২শ’ টাকা হারে ৬ বছর মেয়াদে টাকা জমা দেয়।
এদিকে মেয়াদ পূর্তির পর গ্রাহকেরা তাদের পাওনা টাকা নাহিদা সুলতানা শান্তার কাছে দাবি করলে তিনি কামরুজ্জামান তালুকদার ওরফে ফিরোজ এর কাছে যেতে বলেন। আবার ফিরোজ এর কাছে গেলে তিনি সন্ধানী লাইফ ইন্সরেন্সের খুলনা শাখায় যেতে বলেন। অপরদিকে ফিরোজ ও শান্তার দেয়া জমাদানের রশিদ নিয়ে সন্ধানী লাইফ ইন্সরেন্সের খুলনা শাখায় গেলে গ্রাহকদের প্রথম কিস্তি ছাড়া বাকি সব রশিদ ভ‚য়া এবং এই ভ‚য়া রশিদের দায় তাদের নয় বলে জানিয়ে দেয়। ফলে গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা ভ‚য়া রশিদের মাধমে ফিরোজ শান্তা গং এর আত্মসাতের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ইতোমধ্যে প্রতারণার শিকার অসহায় গ্রাহকেরা তাদের জমাকৃত টাকার দাবিতে ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ফিল্ড অফিসার ও রিকো’র হিসাব রক্ষক এবং সাবেক ইউপি সদস্য মোসাঃ নাহিদা সুলতানা শান্তা নিজেকে আওয়ামীলীগ নেত্রী দাবি করে বলেন, অভিযোগকারীরা টাকা জমা দিয়েছে এটা সত্য। তবে জমাকৃত টাকা যথাযথভাবে অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। তারা জমা রশিদও নিয়েছে। দায় দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
এনজিও রিকো’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সন্ধানী লাইফ ইন্সরেন্সের শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ কামরুজ্জামান ফিরোজ মুঠোফোনে গ্রাহকদের বিভিন্ন মেয়াদি ডিপিএস ও সঞ্চয়ের টাকা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, রিকো এবং সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জমাকৃত টাকা করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে আগামী জানুয়ারী থেকে গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা পর্যায়ক্রমে ফেরত দেয়া হবে। গ্রাহকদের কোন ভ‚য়া রশিদ দেয়া হয়নি। হিসাব রক্ষক নাহিদা সুলতানা শান্তা নিজেই কৌশলে গ্রাহকদের হয়রানি এবং টাকা আত্মসাত করেছে। তার আত্মসাতকৃত টাকার দায় তাকেই বহন করতে হবে।