নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বিবস্ত্র করে গৃহবধূ নির্যাতন: কালাম-শাহেদ রিমান্ডে
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় আরো দুই আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এদিকে ওই ঘটনায় কুমিল্লা, সিলেটের হবিগঞ্জ ও একলাশপুর থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) বিকালে আবুল কালাম ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল বুধবার রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চশুই গ্রামের অভিযান চালিয়ে মামলার ৩নং আসামি আবুল কালামকে ও রাতে একলাশপুরে অভিযান চালিয়ে মাঈন উদ্দিন শাহেদকে ধরে। বুধবার সকালে সিলেট জেলার হবিগঞ্জের চুনারঘাট কালেঙ্গা সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ৬ নং আসামি সামছু উদ্দিন সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সুমনকে এখনো বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।
দুপুরে আবুল কালামকে ৩ মামলায় ২১ দিন ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে ২ মামলায় ৮দিন রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করা হয়।
নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, আবুল কালাম ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে দুপুরে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩নং আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাসফিকুল হকের কাছে হাজির করা হয়। জ্যেষ্ঠ হাকিম শুনানি শেষে ধর্ষণ মামলায় ৪ দিন, পর্ণগ্রাফী ও নির্যাতন মামলায় ৬দিনসহ আবুল কালামের মোট ১০দিন এবং মাঈন উদ্দিনকে নির্যাতন মালায় ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে আসামি আব্দুর রহিম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ মেম্বারের রিমান্ড শেষে ৩নং আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাসফিকুল হক এর আদালতে হাজির করলে তাকে ১৬৪ ধারায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বলেন তিনি।
চতুর্থ দিনের মত আজও নোয়াখালী বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন, বাম গণতান্ত্রিক জোট নোয়াখালীর বিভিন্ন সংগঠন।
প্রসঙ্গত, ওই নারীর সাথে তার স্বামীর তালাক না হওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে দেখা করতে আসেন। দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে তাদের বাড়িতে আসেন। এ বিষয়টি দেখেন স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। অনৈতিক কাজ ও তাকে কুপ্রস্তাব দেয়, রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।