প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে আবারো জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে আবারো জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে তার আগে অবরুদ্ধ কাশ্মীর থেকে সামরিক অবরোধ প্রত্যাহার এবং কাশ্মীরী জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে।
১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভের দু’মাস পর নয়াদিল্লির নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে প্রবেশ করে। মঙ্গলবার দিবসটি উপলক্ষে দেয়া স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বার্তায় তিনি বলেন, তিনি ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তার আগে নয়াদিল্লিকে অবশ্যই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল কাশ্মীরের দখলদারিত্ব থেকে সরে আসতে হবে।
‘আমি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এ জন্য কাশ্মীররের ওপর ভারতের আরোপ করা সামরিক অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী কাশ্মীরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে।’ বলেন ইমরান খান।
পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে ভারত ও পাকিস্তান। লাইন অব কন্ট্রোল দ্বারা ভাগ করে কাশ্মীরের দু’অংশ শাসন করে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। ২০১৩ সাল থেকে ওই অঞ্চল কঠোর যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
২০১৯ সালে কাশ্মীর রাজ্যকে দেয়া স্বায়ত্বশাসনের অধিকারের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়। এর পরপরই সেখানে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে মোদি প্রশাসন। অঞ্চলটিতে স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম করছে স্বাধীনতাকামীরা।
উপত্যকাজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। জনসমাবেশ, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য নাগরিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। গ্রেফতার করা কয়েক হাজার কাশ্মীরীকে।
মার্চে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত এ কড়াকড়ি আরোপ ছিল। মঙ্গলবারের বক্তব্যে কাশ্মীরী নাগরিকদের ওপর ভারতের কড়াকড়িকে সামরিক অবরোধ বলে অভিহিত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
বলেন, তারা ভারতীয় নাগরিক নয়, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের কোনো অধিকার নেই। যে অধিকার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাদের দিয়েছে।
১৯৪৮ সালে নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাস করে। যেখানে কাশ্মীরী জনগণের ইচ্ছাকে প্রধান্য দেয়া হয়। বলা হয়, কাশ্মীরীরা চাইলে পাকিস্তান অথবা ভারতের সঙ্গে একীভূত হতে পারে।
এরপর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে সামরিক নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে থাকে ভারত। মোতায়েন করা হয় বহু সেনা। নানা ধরনের আইন পাস করে স্বাধীনতাকামীদের কণ্ঠরোধের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ভারতীয় সরকার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যেদিন কাশ্মীর নিয়ে কথা বলেছেন, সেদিন ভারত একটি নতুন আইন পাস করে অঞ্চলটি নিয়ে। যেখানে ভারতীয়দের কাশ্মীরে জমি কেনার অধিকার দেয়া হয়। নয়াদিল্লির এ পদক্ষেপকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটির জনমিতি পরিবর্তনের নীল নকশা বলে অভিহিত করা হয়েছে।