করোনার তৃতীয় ঢেউ: দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় এবার সেনাবাহিনী নামাতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত কয়েকদিনের সংক্রমণ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশটিতে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এবার মারণ রোগের থাবা গুঁড়িয়ে দিতে সেনাতেই ভরসা রাখছে সিউল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় শনিবার ৯৫০ ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মহামারি শুরু হওয়ার পর এটিই দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্তের ঘটনা। এর আগে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল গত ফেব্রুয়ারিতে, ৯০৯ জন। খবর রয়টার্সের।
করোনার এই তৃতীয় ঢেউকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ‘জরুরি অবস্থা’ বলে উল্লেখ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামাজিক দূরত্ব আরও কঠোর করা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির সরকার।
কোরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ থেকে জানানো হয়, নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে ৯২৮ জন স্থানীয় ও ২২ জন বিদেশ থেকে এসেছেন। বর্তমানে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৩৬ ও মৃতের সংখ্যা ৫৭৮।
প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বলেন, ‘এটি সত্যিকার অর্থেই এক জরুরি পরিস্থিতি।’ সংক্রমণ রোধে তিনি পুলিশ, সামরিক কর্মকর্তা ও পাবলিক হাসপাতালের ডাক্তারদের একত্রে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে মুন লিখেছেন, ‘ড্রাইভ করা ও পায়ে চলাচলকারী উভয় লোকজনের মধ্যেই আমরা ব্যাপকমাত্রায় করোনা পরীক্ষার পরিকল্পনা করছি, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে সংক্রমণ থামানো যায়।’
সিউলে ডাক্তার দেখাতে আসা ২৯ বছরের চায়ে হেইয়ং-চ্যান রয়টার্সকে বলেন, ‘আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর থেকেই আমি চিন্তিত ছিলাম। আমাকে আজ সাবওয়ে ব্যবহার করতে হয়েছে যা আমাকে আরও চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। আমি চেষ্টা করবো যত দ্রুত সম্ভব বাসায় চলে যেতে।’
দক্ষিণ কোরিয়ায় মঙ্গলবার থেকে কঠোর সামাজিক দূরত্বের নির্দেশ জারির পরেও আক্রান্ত বেড়েই চলছে। কারফিউয়ের কারণে রেস্টুরেন্টসহ প্রায় সকল ব্যবসাই এখন বন্ধ রয়েছে।
সিউলে বর্তমানে ২.৫ মাত্রার নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। এটি তিনে উঠলে স্কুলে দূর শিক্ষণ ব্যবস্থাসহ বাসা থেকে অফিস করা ও ১০ জনের বেশি একসাথে না হওয়ার আদেশ জারি হবে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী চাং সি-কিউন জানান, তৃতীয় ঢেউ রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা তারা করবে। তিনি বলেন, ‘এখনই সংক্রমণ কমানো না গেলে নিষেধাজ্ঞার মাত্রা তিনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।’