কাশিমপুরে প্রবাসীর বাড়ি দখলের চেষ্টা; প্রাণনাশের হুমকি
বি এ রায়হান, গাজীপুর:
গাজীপুরের কাশিমপুর সারদাগঞ্জ এলাকায় প্রবাসীর বাড়িতে ভাড়াটিয়ার জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মো:তায়জুল ইসলাম কাজলের স্ত্রী লাবনী ইসলাম জানান, কাশিমপুর থানাধীন কাজীপাড়া ৪নং ওয়ার্ড এলাকায় বিগত ২০০৬ সালে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে টিনসেট বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসিতেছি। বিগত ২০১৭ সালে একই জায়গায় টিনসেট বাড়ি ভেঙ্গে ৫তলা ভবনের ফাউন্ডেশন নিয়ে দুই তলা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছি।
এসময় নিচতলায় একটি রুমে আব্দুর রহমানের কাছে বিগত পহেলা মে ২০১৮ ইং তারিখে দোকান ভাড়া দেই। কয়েক মাস নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে। এক পর্যায় গত ৭/৮ মাস পূর্বে ভাড়ার টাকা নিয়ে নানা প্রকার জটিলতা সৃষ্টি করতে থাকে। এসময় আমি দোকান ছেড়ে দেয়ার জন্য লিখিত নোটিশ প্রদান করলে। এই নিয়ে বিভিন্ন কথার কাটাকাটির এক পর্যায় কাশিমপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। ঘটনার বিষয় তৎকালীন ওসি আকবর হোসেন এর মধ্যস্ততায় ভাড়াটিয়াকে ৩ মাসের সময় স্বাপেক্ষে গত পহেলা অক্টোবর ২০২০ইং তারিখে দোকানটি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ধার্য্যকৃত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান দোকান ঘরটি ও ভাড়ার টাকা বুঝাইয়া দেয় নাই। পাওনাকৃত ভাড়ার টাকা ও বিদ্যুৎ বিল চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারতে আসে।
এই ঘটনার আমি বাদী হয়ে গত ২৩ অক্টোবর ২০২০ইং তারিখে থানায় একটি জিডি করি যাহার নং-৯৩।
হঠাৎ গত ৫ অক্টোবর ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান জায়গার মালিক দাবী করে আমার কাছে একটি মামলার নোটিশ পাঠায়।
এঘটনায় একাধিকবার থানায় ও সহকারী পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
এরকম পরিস্থিতিতে পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিগত ১২ অক্টোবর সিসি ক্যামেরা স্থাপন করি। কিন্তু ওই সময় আব্দুর রহমান ও তার লোকজন সিসি ক্যামেরা স্থাপনে জোরপূর্বক বাধা প্রদান করে এবং খুন জখমের ভয়ভীতি প্রদান করে।
গত ২১ শে নভেম্বর-২০২০ইং তারিখে আব্দুর রহমান তার নিজের নামে বিদ্যুৎ এর মিটার দোকানে স্থাপন করতে যায়। আমার বাড়িতে কেন সে মিটার লাগাইবে এই কথা জিজ্ঞাসা করাতে আব্দুর রহমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে বেধরক মারধর করে গুরুতর আহত করে।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে কাশিমপুর থানায় মারামারির ঘটনায় বিগত ২২ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখে ৪জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার আসামীরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ার কারণে প্রশাসনের সখ্যতায় গ্রেফতার এড়িয়ে আদালতে যথারীতি আত্মসমর্পন করে। পরে বিগত ৩ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখে অস্থায়ী জামিনে এসে বেপরোয়া হয়ে উঠে। ওই দিনই আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময় বাড়ির সামনে লোকজন নিয়ে এসে মামলা কেন করছি এর খেশারত দিতে হবে এই মর্মে জীবনে মেরে ফেলার হুমকিসহ বাসার ভিতর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে করে আমি অসহায় অবস্থায় বাচ্চাদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এমনকি বাসার ভাড়াটিয়াদেরকে বাসা ছেড়ে দেয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদান করে। ভাড়াটিয়ারা রীতিমতো আতঙ্কে আছে। কিছু ভাড়াটিয়া ভয়ে বাসা ছেড়ে দিবে বলে জানান। বর্তমানে আমি ছেলে মেয়েদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে আব্দুর রহমান, সালমা রহমান, নবির হোসেন পলাশ, মো: ছাব্বির আহম্মেদসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনকে আসামী করে কাশিমপুর থানায় গত ৫ ডিসেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরী করি, যাহার নং-১৬০। আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে জীবন যাপন করছে।
আমরা স্বপরিবারে চাঁদপুর জেলার হাইমচর থেকে এসে এই এলাকায় জমি ক্রয় করে বসবাস করছি। এখানে আমাদের তেমন কোন পরিচিত আত্মীয়স্বজন নেই।
এমতাবস্থায় আমি আমার সন্তানরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী এদেশের একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। তারপরও আমি আজ বড় অসহায়। আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে রাষ্ট্রের সকল উর্দ্ধতন প্রশাসনিক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি উর্দ্ধাত আহ্বান ও সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে কোনাবাড়ী কাশিমপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার থোয়াই অংপ্রু মারমা জানান, বিষয়টি আমি অবগত আছি। আইনগতভাবে সঠিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।