নারীনেত্রী আয়শা খানম না ফেরার দেশে
মহিলা পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়শা খানম আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি আজ শনিবার (২ জানুয়ারি) ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন নারী নেত্রী আয়শা খানম। রাতে উনি ঢাকার নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ওনাকে বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মালেকা বানু আরও জানান, আয়শা খানমের মরদেহ নেত্রকোনায় নিজ গ্রামে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর আয়েশা খানম নেত্রকোনা ও দুর্গাপুরের মাঝখানে গাবড়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গোলাম আলী খান এবং মা জামাতুন্নেসা খানম।
হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক আয়েশার।
তবে ১৯৬৬ সাল থেকে ছাত্র আন্দোলনে পুরোপুরি সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ফলে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের পথে এগিয়ে যেতে যেসব আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল সেসবগুলোতেই তিনি সামনের সারিতে ছিলেন।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং সংগ্রামী নেত্রী আয়েশা খানম। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি।
এছাড়া রোকেয়া হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ঢাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠিত করার দায়িত্ব ছিল মূলত আয়েশা এবং তার সহকর্মী ছাত্র নেতাদের ওপর।
এছাড়া ছাত্র নেতা হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বাধিকার আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়ে তোলা ও সচেতনতার কাজেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন তিনি।
তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এক অকৃত্রিম অভিভাবককে হারালো।