এক যুগের বেশি সময় পর আবারো পেছাল নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ
এক যুগের বেশি সময় পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩২বারের মতো পেছানো হয়েছে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচার কাজ।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ নেয়ার কথা ছিল। আশা করা হচ্ছিল তার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে একযুগ ঝুলে থাকা দুনীতির এ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি সম্পন্ন হবে। কিন্তু, বরাবরের মতো এদিনও অনুপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া। শুনানি পেছাতে ৩২বারের মতো আবেদন করেন তার আইনজীবী।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। হাজির হতে পারবেন না আদালতে- এমন আবেদনের শুনানি শেষে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান ১ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবতী দিন ধার্য করেন।
গত ২ বছর ধরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা লাগাতার সময় আবেদন করে আসছেন জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুদক আইনজীবী। তিনি বলেন, মামলার বাকি ১০ আসামির বিরুদ্ধে শুনানি সম্পন্ন হলো। শুধুমাত্র বেগম জিয়ার অনুপস্থিতির কারণে মামলাটির বিচার শুরু করা যাচ্ছে না।
তবে, বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের দাবি আদালতে হাজির হওয়া খালেদা জিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলেই তাদের মক্কেল আদালতে হাজির হচ্ছেন না।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল
ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে তিনি গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন।