ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে আসছে আরো ৬০ লাখ টিকা
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে সরকারের কেনা করোনার টিকার তিন কোটি ডোজের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান আজ সোমবার আসছে। একই দিন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস নিজেদের জন্য আলাদা চালানে আরো ১০ লাখ ডোজ টিকা আনছে। এ ছাড়া টিকা প্রয়োগের বিষয়ে আজ চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাড়ে ১০ মাস পর অনুমোদন পেল অ্যান্টিবডি টেস্ট।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা কোভিশিল্ড ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। এই টিকার তিন কোটি ডোজ আমদানির জন্য গত নভেম্বরে সরকার সেরাম ইনস্টিটিউট ও দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কম্পানি বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে। এর আগে এই টিকা দেশে আমদানির জন্য বেক্সিমকো চুক্তি করে সেরামের সঙ্গে।
আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছার কথা সরকারের কেনা টিকার প্রথম চালান। একই ফ্লাইটে বেক্সিমকোর টিকার চালানটিও আসার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে টিকার চালানটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মা গ্রহণ করবে। সেখান থেকে তারাই নিয়ে যাবে গাজীপুরে তাদের নির্ধারিত স্টোরে। পরে সেখান থেকে সরকারের দেওয়া তালিকা অনুসারে বেক্সিমকোর পরিবহনে ভাগে ভাগে পৌঁছে দেওয়া সব জেলার সরকারি স্টোরে।
গতকাল সন্ধ্যায় বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন গুলশানে নিজ বাসায় এক ব্রিফিংয়ে আজ সকালে সেরাম থেকে টিকা আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি জানান, সরকারের ৫০ লাখ ছাড়া বাকি যে ১০ লাখ টিকা আসবে সেটা বেক্সিমকোসহ দেশের সব ফার্মাসিটিউক্যাল কম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ব্যবহার করা হবে। সেটা সরকারের অনুমতি নিয়েই করা হবে।
যদি কিছু টিকা থেকে যায় তবে সেগুলোও সরকারের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বেসরকারি হাসপাতালে দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সেরাম থেকে সরকার সবচেয়ে কম দামে টিকা পেয়েছে। এত কম দামে সেরাম আর কাউকে টিকা দেয়নি। আমাদের সঙ্গে সেরামের যে চুক্তি হয়েছে সেটাও নজিরবিহীন। যেখানে বলা আছে, সেরাম যদি ভারত সরকারকে আমাদের চেয়ে কম দরে টিকা দেয় তবে আমাদের সেই দামেই দিতে হবে। আর যদি ভারত সরকার আমাদের চেয়েও বেশি দামে কেনে তবে আমরা সেই অতিরিক্ত টাকা দেব না।’
বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো বলেন, ‘এই টিকা আমরা আমদানি করছি, আমরা পৌঁছে দেব। পথে কোথাও কোনো সমস্যা হলে, কোনো টিকা নষ্ট হলে, কোনো ঘাটতি থাকলে সব দায়-দায়িত্ব আমাদের, সরকারের কোনো দায় নেই। তারা আমাদের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজের প্রতিটি টিকা বুঝে নেবে। আজ যে টিকা আসবে সেগুলো ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ল্যাবে ব্যাচ ধরে ধরে পরীক্ষা হবে। পরিবহনের সময় তাপমাত্রা ঠিক ছিল কি না কিংবা ঠিক আছে কি না সেগুলোও তারা পরীক্ষা করে দেখবে, তারপরই চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।’
এর আগে ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে বিনা মূল্যে ২০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড পাঠিয়েছে। এই টিকা নির্ধারিত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। এ বিষয়ে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিকেল ৩টায় ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে